আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি – যা আরবি ভাষা ও সাহিত্যের শ্রেণিতে সকল শিক্ষার্থীর চাহিদা মেটানোর উপায় এর অন্তর্ভুক্ত।

Table of Contents

আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি

 

আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি

 

প্রত্যাশিত

প্রত্যাশিত জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের মাধ্যমে কোন বিষয়ের শিখন পূর্ণতা পায়। দাখিল স্তরের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ের কার্যকর ও ফলপ্রসূ শিখনে ও এর বিষয়বস্তুগত জ্ঞান, প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির কাঙ্খিত পরিবর্তন অনস্বীকার্য। ইসলামি জীবন দর্শন ও জীবন প্রণালীর প্রধান দুই উৎস-আল-কুরআন ও আল- হাদিস এবং আকাইদ ও ফিকহ শাস্ত্রসমূহ আরবি ভাষা ও সাহিত্যের উপর নির্ভরশীল। এজন্য ইসলামি জীবনযাপন, আচার- আনুষ্ঠানিকতা ও ব্যবহারিক জীবনের একটি অপরিহার্য বিষয়।

এজন্য আরবি ভাষা ও সাহিত্যের-এর প্রভূত তাত্ত্বিক জ্ঞান অর্জনই যথেষ্ঠ নয়, তাত্ত্বিক (Theoretical) জ্ঞানের সাথে সাথে-এর প্রায়োগিক (Practical) দক্ষতা অর্জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রতিটি মুমিন মুসলমানের জন্য অপরিহার্য।

কারণ প্রায়োগিক দক্ষতা বা ব্যবহারিক (Practical / Applied) জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে কোন বিষয়ের জ্ঞান অর্জন যথার্থ হয়। যেমন বহুল ব্যবহৃত সেই উক্তি ‘I read, I forget. I do, I learn. অধিকন্তু দাখিল স্তরের আরবি ভাষা ও সাহিত্যের এমন কতিপয় বিষয়বস্তু আছে যেগুলো শ্রেণি কার্যক্রমে হাতে- কলমে শিক্ষা দেওয়া না হলে শিখন অসম্পুর্ণই থেকে যায়। এজন্য দাখিল স্তরের আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিভিন্ন কার্যকর উপায় অবলম্বন করা অত্যাবশ্যক। এ অধিবেশনে আমরা দাখিলস্তরের আকাইদ ও ফিকহ, আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জানবো ।

আরবি ভাষা ও সাহিত্য-এর জ্ঞানার্জনের উৎস ও উপায়সমূহ

দাখিলস্তরের মাদরাসার আরবি ভাষা ও সাহিত্যের বিষয়ে শ্রেণিকক্ষে নিয়মতান্ত্রিক শিখন-শেখানো কার্যক্রমের মাধ্যমে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞানার্জনে পাঠ্যপুস্তক, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক মূলগ্রন্থ, শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচী, শিক্ষক নির্দেশিকা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইত্যাদির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়াও দাখিলস্তরের আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞানার্জনের আরো বহুমাত্রিক উৎস ও উপায় আছে। যেমন- আল-কুরআন, আল-হাদিস, অন্যান্য প্রামাণ্য, ইসলামি ম্যাগাজিন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইসলামিক ও আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক জার্নাল, সরকারি প্রকাশনা— যেমন: ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত আরবি ভাষা ও সাহিত্য সংক্রান্ত যাবতীয় প্রকাশনা ইত্যাদি।

আবার রেডিও টেলিভিশনের ইসলামি অনুষ্ঠান, ইসলামি বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান, নিদর্শনসমূহ, যাদুঘর, মানচিত্র, ছবি, চার্ট, চলচ্চিত্র, নাটক, লাইব্রেরি, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, স্টাডিসার্কেল, জীবন কাহিনী, পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণ, মসজিদে ইমাম সাহেবের আলোচনা, ওয়াজ, মাহফিল, ইসলামি জলসা ইত্যাদির মাধ্যমে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞানার্জন করা যায়।

আবার বিভিন্ন ধরনের সহ-শিক্ষামূলক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমেও আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান অর্জন করা যায়। উল্লেখ্য যে, শ্রেণিকক্ষে আকাইদ ও ফিকহ বিষয়ের শিখন-শেখানো কার্যক্রমের সংশ্লিষ্ট অনুষঙ্গ হিসেবেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে এসব উপায় অবলম্বন করতে হয়।

শিখনক্ষেত্রে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের ব্যবহারিক জ্ঞান ও দক্ষতা

বেঞ্জামিন প্লম-এর ‘Taxonomy of Educational Objectives’ মোতাবেক শিখনের মৌলিক ৩টি ক্ষেত্র রয়েছে। এগুলো হলো— (ক) জ্ঞানগত ক্ষেত্র (Cognitive Domain), (খ) আবেগিক ক্ষেত্র (Affective Domain) ও (গ) মনোপেশি ক্ষেত্র (Psychomotor Domain)। আরবি ভাষা ও সাহিত্য মূলত ইসলামি জ্ঞানের আলাদা দু’টি ধারা।

বাংলাদেশের মাদরাসা শিক্ষার দাখিলস্তরের শিক্ষাক্রমে এ আরবি ভাষা ও সাহিত্য একটি বিষয় হিসেবে পঠন-পাঠন প্রচলিত। জ্ঞানের উপরোক্ত ক্ষেত্র অনুসারে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের আলোচ্য বিষয়সমূহ শিখনের জ্ঞানগত ও আবেগিক ক্ষেত্রের সাথে বেশি সংশ্লিষ্ট। কারণ আরবি ভাষা ও সাহিত্যের বিষয়সমূহ সাধারণত বিমুর্ত ধারণা সংশ্লিষ্ট ।

আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমের ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়

আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নানাকৌশল ও উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। নিম্নে কতিপয় কৌশল সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:

শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখন-শেখানো পদ্ধতি ও কৌশলসমূহ অবলম্বন:

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের শিক্ষণ প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিত করা। আর শিখনে শিক্ষার্থীর সক্রিয়তা অত্যাবশ্যক। এজন্য অন্যান্য পাঠ্য বিষয়ের ন্যায় আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় হিসেবে শিক্ষককে প্রথমত শ্রেণিতে শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক ও সক্রিয় শিখন-শেখানো পদ্ধতি ও কৌশলসমূহ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখন পদ্ধতি ও কৌশলসমূহ সক্রিয় শিখন পদ্ধতি ।

হাতে-কলমে কাজ:

আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে হাতে-কলমে শিক্ষাদান। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের শিখন-শেখানো প্রচেষ্টার অন্যতমমূল কাজ হলো পাঠ্য বিষয়ে শিক্ষার্থীর ‘Head On’, ‘Hands On ‘ ‘ Heart on´ তথা জ্ঞানগত, মনোপেশি ও আবেগিক ক্ষেত্রকে জাগরিত করা। এজন্য আরবি ভাষা ও সাহিত্যের যেসব পাঠে মনোপেশি উদ্দেশ্য রয়েছে সেসব পাঠে শিক্ষককে অবশ্যই হাতে-কলমে তথা ‘Learning by doing’- প্রক্রিয়ায় শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

হাতে-কলমে কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর Hands On´- তথা দক্ষতার উন্নয়ন ঘটে। আরবি ভাষা ও সাহিত্যের পাঠ্য বিষয়বস্তুর প্রকৃতি বা ধরণ বিবেচনা করে হাতে-কলমে কাজের কৌশল ও পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া ও অন্যান্য ক্ষেত্রের উদ্দেশ্য অর্জন ও নতুন শিখনকে সুদৃঢ় করার কৌশল হিসেবে বিশেষত ব্যক্তিগত/একক কাজ, জোড়ায় কাজ, দলগত কাজ, দলগত আলোচনা ইত্যাদি কৌশল কার্যকরভাবে প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে।

শিখনে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্তকরণ:

শিখন সম্পর্কে একাধিক গবেষণা নিশ্চিত করেছে যে, শিক্ষার্থীরা তখন সবচেয়ে ভাল শিখে যখন তারা নিজেদেরকে সক্রিয়ভাবে শিখনে জড়িত করে। অধিকন্তু শিখনে শিক্ষার্থীদের ‘সক্রিয়ভাবে ব্যাপৃতকরণকে এক বিংশ শতাব্দীর শিক্ষার্থীদের অন্যতম চাহিদা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থীদের পুনঃপুন আকুতি হচ্ছে— ‘Engage me, Engage me’ Engage me….’-এ আলোকে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের প্রতিটি পাঠে বিষয়বস্তুর তাত্ত্বিক উপস্থাপনের সাথে সাথে উক্ত তাত্ত্বিক জ্ঞানকে প্রয়োগ করার জন্য বিভিন্ন ধরণের শ্রেণি কাজ প্রদান করতে হবে। যাতে তারা নিজেরাই বিষয়বস্তুর ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ, সংশ্লেষণ, সূক্ষ্মচিন্তন, সমস্যা সমাধান ও উচ্চস্তরের চিন্তন দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে পারে। তাই আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিক্ষকের অন্যতম ও নৈমিত্তিক একটি কৌশল হচ্ছে শিখনে তাদের ব্যাপৃতকরণের নানাকৌশল অবলম্বন করা। আর শিক্ষক তখন জ্ঞানদানকারীর পরিবর্তে সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করবেন।

মঞ্চায়ন/দৃশ্যায়ন/ভূমিকাভিনয়/প্রদর্শন:

দাখিলস্তরের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ের অনেক পাঠ যোগ্যতানুগতিক পদ্ধতির আলোচনা, মাথা খাটানো, একক কাজ, জোড়ায় কাজ বা দলীয় কাজের পরিবর্তে মঞ্চায়ন/দৃশ্যায়ন/ভূমিকাভিনয় পদ্ধতি অবলম্বন করে শিক্ষার্থীদের ধারনা সবচেয়ে কার্যকরভাবে স্পষ্ট করা যায় । যেমন- বিভিন্ন ধরনের সালাত আদায়ের পদ্ধতি। মাধ্যমিক স্তরের আকাইদ ও ফিকহ বিষয়ের বিশেষত ফিকহ অংশের যেসব পাঠ এ প্রক্রিয়ার আওতায় এনে পাঠদান করা যায় তার সম্ভাব্য একটি তালিকা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্দেশিত কাজ/অর্পিত কাজ প্রদান:

দাখিলস্তরের আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে শ্রেণিতে উপস্থাপিত পাঠের আলোকে শ্রেণিতে অথবা শ্রেণিকক্ষের বাইরে শিক্ষক জীবনঘনিষ্ট ও প্রয়োগমূখি বিভিন্ন ধরণের নির্দেশিত কাজ/অর্পিত কাজ/অনুসন্ধানমূলক কাজ/প্রকল্প প্রদান করতে পারেন। এ ধরনের কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ের বাস্তব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করতে পারে।

আইসিটি মিডিয়ার ব্যবহার:

আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ও প্রযুক্তিভিত্তিক নানা মিডিয়া ক্রমাগতভাবে শিখনের অসংখ্য সহজ ও কার্যকর দ্বার অবারিত করছে। আরবি ভাষা ও সাহিত্যের শিখন-শেখানো কাজেও এসব মিডিয়া ব্যবহার করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কার্যক্রমে তাদের জ্ঞান ব্যবহারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারেন। যেমন- হালাল ও হারাম খাদ্যবস্তু ও পানীয় সম্পর্কে শিখন-শেখানো কাজে শিক্ষক সহজেই ইন্টারনেটের সহায়তায় হালাল ও হারাম বস্তু ও পানীয়গুলোর চিত্র শিক্ষার্থীদের চোখের সামনে তুলে ধরতে পারেন। উল্লেখ্য যে, আরবি ভাষা ও সাহিত্যের সকল বিষয়বস্তু কার্যকর শিখনে আইসিটি মিডিয়া ও আইসিটি নির্ভর উপকরণ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অডিও ভিডিওভিত্তিক উপকরণ ব্যবহার:

অডিও ভিডিও ভিত্তিক উপকরণ সর্বাধুনিক না হলেও এর কার্যকারীতা ও আবেদন নিত্য নতুন। বিশেষত আরবি ভাষা ও সাহিত্যের কিছু বিষয়ের জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নে অডিও-ভিডিও ভিত্তিক উপকরণ থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়পক্ষই প্রভূত উপকৃত হতে পারে। যেমন, আরবি ভাষা ও সাহিত্য-এর সাথে আল-কুরআন ও আল-হাদিসের অবিচ্ছেদ্য সংশ্লিষ্টতা আছে।

আরবি ভাষা ও সাহিত্য সংক্রান্ত বিভিন্ন হুকুম-আহকাম এবং বিভিন্ন মাসয়ালা-মাসায়েল-এর মূল উৎস সম্পর্কে জানতে হলে আল-কুরআন ও হাদিস-এর পঠন-পাঠন অত্যাবশ্যক। আর এক্ষেত্রে আল-কুরআনের সূরা তিলাওয়াত/পঠন ও হাদিস পাঠের ভিডিও ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা সহজেই এ বিষয়ের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে পারেন।

এছাড়াও আরবি ভাষা ও সাহিত্যের আরো নানা শিখন বিষয় আছে যেগুলোর ক্ষেত্রে অডিও-ভিডিও ভিত্তিক উপকরণ ব্যবহার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হতে পারে। যেমন, সালাত আদায়ের পদ্ধতি সম্বলিত দৃশ্য, হজের বিভিন্ন স্থান ও আনুষ্ঠানিকতা পালনের দৃশ্য, বিভিন্ন দোয়া, মুনাজাত, আজান, ইকামাত ইত্যাদি।

 

আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি

 

বিষয় সংশ্লিষ্ট বাস্তব উপকরণ ব্যবহার:

ডিজিটাল উপকরণ ও অন্যান্য উপকরণ ছাড়াও আরবি ভাষা ও সাহিত্যের সাথে বিশেষভাবে সংশ্লিষ্ট যেসব শিখন-শেখানো উপকরণ আবশ্যকতা চিহ্নিত করে, সেগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং শিখন-শেখানো কাজে ব্যবহার করার মাধ্যমে এ বিষয়ের তাত্ত্বিক জ্ঞানকে প্রয়োগমুখি করা যায় ।

আরবি ভাষার দক্ষতা উন্নয়ন ও মূলগ্রন্থ পঠন-পাঠন:

আরবি ভাষা ও সাহিত্যমূলত মহাগ্রন্থ আল-কুরআন ও হাদিস থেকে উৎসারিত। আল-কুরআন ও হাদিসের জ্ঞানের বাহন হচ্ছে আরবি ভাষা।

সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, আলোচনা সভা:

ইসলামি জীবন দর্শনে আরবি ভাষা ও সাহিত্য একটি জীবন ঘনিষ্ঠ বিষয়। আরবি ভাষা ও সাহিত্যের বিষয়ের শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারনা অর্জনের ক্ষেত্রে কেবল এ বিষয়ে শ্রেণিকক্ষের গতানুগতিক পঠন-পাঠনই যথেষ্ঠ নয়। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি এতদসংক্রান্ত বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, আলোচনা সভা, কর্মশালার আয়োজন করা ও তাতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে-এ বিষয়ের জ্ঞান ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা যায়।

বিভিন্ন ইসলামি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড/পর্ব উদযাপন ও কর্মসূচি পালন:

দাখিলস্তরের আরবি ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষাক্রমে এমন কিছু বিষয় আছে, যেগুলো বিভিন্ন ইসলামিক কর্মকাণ্ড/পর্ব উদযাপন বা আয়োজনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে শিক্ষার্থীদের শেখানো যায়, যেমন- রোগির সেবা, দুঃস্থ, অসহায়, নিঃস্বদুর্গত ও বিধবার সেবা, পরিচ্ছন্নতা অভিযান ইত্যাদি।

আবার আরবি ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আত্মশুদ্ধি, শালীনতা, মানব সেবা, পরোপকার ইত্যাদি বিষয়ে শ্রেণিতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। আবার শ্রেণিকক্ষে শিখন-শেখানোর অংশ হিসেবে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আচার-আনুষ্ঠানিকতা/পর্ব/সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড উদযাপনের মাধ্যমে এ বিষয়ের জ্ঞান ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা যায়।

 

আরবি ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি

 

বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষক নির্দেশিকার প্রবর্তন:

আরবি ভাষা ও সাহিত্যের বিষয় শিক্ষকের নিজ বিষয়ের উপর গভীর দখল ও দক্ষতার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে শ্রেণিকক্ষে তার শিখন-শেখানো কার্যক্রমে। আর নিজ বিষয়ের উপর জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে । এছাড়াও এতদসংক্রান্ত শিক্ষক নির্দেশিকা প্রণয়ন করে তদানুসারে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা যায়।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment