Site icon Language Gurukul [ ভাষা গুরুকুল ] GOLN

অস্টিনের বাককৃতি তত্ত্ব

আজকে আমাদের আলোচনার  বিষয়-অস্টিনের বাককৃতি তত্ত্ব

অস্টিনের বাককৃতি তত্ত্ব (Austin’s Speech Act Theory)

ভাষা দার্শনিক জন অস্টিন ১৯৫৫ সালে সর্বপ্রথম তাত্ত্বিকভাবে বাককৃতি উপস্থাপন করেন। তিনি নির্দিষ্ট সময়কাল ধরে ইংল্যান্ড ও আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ভাষণ প্রদান করেছিলেন তাতে বাক্য বা উক্তির ক্রিয়াশীলতার কথাও বলেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরে ভাষণগুলি একত্রিত করে How to do Things With Words (Austin, 1962) নামে একটি বই প্রকাশিত হয়।

 

 

অস্টিন তাঁর বাককৃতি তত্ত্বের প্রথম দিকে ইংরেজি ভাষার বিভিন্ন ধরনের বাক্য বিশ্লেষণ করেছেন এবং লক্ষ করেছেন যে এসব উক্তি বা বাক্যের মাধ্যমে বিবৃতি প্রকাশের পাশাপাশি ক্রিয়াশীলতা নির্দেশিত হয়। ইংরেজি বাক্যসমূহকে তিনি তার অলোচনায় দুইটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন, যথা-

১) বিবৃতি প্রকাশী বাক্য (constative sentence)

২) কার্য সম্পাদী বাক্য (performative sentence)

বিবৃতি প্রকাশী বাক্যের মাধ্যমে সাধারণত কোনো বিষয়ে বিবৃতি প্রদান করা হয়। অন্যদিকে, কার্য- সম্পাদী বাক্যের মাধ্যমে বাক্যের ক্রিয়াশীলতা উপস্থাপিত হয়। কার্য-সম্পাদী বাক্যের ক্রিয়াধর্মিতার মাত্রার ওপর নির্ভর করে একে তিনি আবার দুইটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন, যথা- পরোক্ষ কার্য-সম্পাদী বাক্য (implicit performative sentence) এবং প্রত্যক্ষ কার্য-সম্পাদী বাক্য (explicit performative sentence)।

 

 

কিন্তু পরবর্তীতে অস্টিন তাঁর এই ধারণাতে স্থির ছিলেন না। তিনি বলেন বিবৃতি প্রকাশী বাক্যেরও ক্রিয়াশীলতা বিদ্যমান। যেহেতু মানুষের মুখ নিঃসৃত সমস্ত বাক্যই ক্রিয়াশীলতা নির্দেশ করে, তাই উক্তির এই ক্রিয়াশীলতা নির্দেশে তিনি প্রস্তাব করেন ‘সার্বজনীন বাককৃতি তত্ত্বের’। এই তত্ত্বটি তিনটি অভ্যন্তরীণ সহকৃতির সমন্বয়ে গঠিত,

যথা-

১) প্রকাশ কৃতি (locutionary act)

২) নিবেদন কৃতি (illocutionary act) এবং ৩) প্রতিক্রিয়া কৃতি (perlocutionary act)

 

প্রকাশ কৃতি ভাষিক সংগঠন যা মূলত উক্তিকে নির্দেশ করে। প্রকাশ কৃতি উচ্চারণের পেছনে বক্তার যে অভিপ্ৰায় থাকে, যা শ্রোতাকে সংজ্ঞাপন শেষ করতে প্ররোচনা করে, তাই নিবেদন কৃতি। সংজ্ঞাপন শেষ করার জন্য বক্তা প্রকাশ কৃতির মাধ্যমে শ্রোতার কাছে তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে।

এই অভিপ্রায়ের প্রতিক্রিয়াতে শ্রোতা যদি কোনো কৃতি সম্পাদন করে তাহলে তাকে প্রতিক্রিয়া কৃতি বলে ।

আরও দেখুন:

 

Exit mobile version