আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-বর্তমান গবেষণাকর্মের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
বর্তমান গবেষণাকর্মের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
প্রত্যেক গবেষণাকর্মেরই নানা ধরনের তাৎপর্য ও সামাজিক উপযোগিতা থাকে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমান গবেষণাকর্মের দুইটি তাৎপর্য উল্লেখ করা যায়। প্রথমত, বিদ্যায়তনিক তাৎপর্য এবং দ্বিতীয়ত, সামাজিক উপযোগিতা। ‘বাংলা ভাষায় লিখিত দাওয়াতপত্রে প্রতিফলিত বিনম্রতার স্বরূপ: একটি প্রয়োগার্থিক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক গবেষণাকর্মটি বাংলা ভাষায় লিখিত দাওয়াতপত্রের বিনম্রতা বিষয়ক প্রথম গবেষণাকর্ম।
পরবর্তীকালে কোনো গবেষক বিনম্রতা সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে গবেষণা করলে বর্তমান গবেষণাকর্ম থেকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা লাভ করতে পারবেন। সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিনম্রতাসূচক শব্দের সঠিক ব্যবহার পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, যা আন্তঃসামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও গুরুত্ব বহন করে। তাই বলা যায়, দাওয়াতপত্রে বিনম্রতাসূচক শব্দের সঠিক প্রয়োগ সামাজিক উপযোগিতার ক্ষেত্রে উপেক্ষণীয় নয়।
দৈনন্দিন জীবনে আমরা অসংখ্য উক্তি ব্যবহার করি সামাজিক তথা ভাষিক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য। দাওয়াতপাত্র যেহেতু সামাজিক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, সেকারণে এখানে শব্দ ব্যবহারে সচেতনতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ বা পূর্বদেশীয় সংস্কৃতিতে উক্তির সাহায্যে প্রকাশিত বাককৃতির মাধ্যমে বিনম্রতার পরিস্ফুটন ঘটে থাকে।
দাওয়াতপত্রের উক্তিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন বাককৃতির মাধ্যমেও সংস্কৃতির ধারক বিনম্রতাসূচক শব্দ প্রকাশ পায়। এসবের মাধ্যমে পারস্পরিক মিথক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। ভাষিক বা সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমের মতো দাওয়াতপত্রের ক্ষেত্রেও বারুকৃতি এবং বিক্রেতার সফল ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।
মানব সমাজে ভাষা ব্যবহারের প্রধান কারণ পরস্পরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন এবং তা রক্ষা করা। আমাদের দৈনন্দিন সংজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত আমরা যেসব উক্তি উচ্চারণ করি বা লিখে প্রকাশ করি সেগুলি বিবৃতি প্রকাশের পাশাপাশি ক্রিয়াশীলতাও নির্দেশ করে। মূলত বিভিন্ন রকমের ক্রিয়াশীলতা বা বাককৃতির মাধ্যমে কোন ধরনের বিনম্রতা প্রকাশ পায় তা উপস্থাপিত হয়েছে এই গবেষণাকর্মে ।
প্রতিটি ভাষিক সমাজে বিনম্রতা প্রচলিত থাকলেও সংস্কৃতিভেদে এর প্রকাশে ভিন্নতা ঘটে। যেকোনো ভাষায় লিখিত দাওয়াতপত্রে আমন্ত্রিত অতিথিকে অনুরোধের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য। আমন্ত্রণ জানানো হয়। একারণে দাওয়াতপত্রের উক্তিমালাতে বিভিন্ন ধরনের বাককৃতি এবং বিনম্রতাসমৃদ্ধ ভাষিক উপাদানের উপস্থিতি বাঞ্ছনীয়।
বাংলা ভাষায় লিখিত দাওয়াতপত্রে বিনম্রতার স্বরূপ বিশ্লেষণের জন্য ব্রাউন এবং লেভিনসন ( Brown and Levinson, 1987) এর বিনম্রতার তত্ত্ব এবং লিচ (Leech, 1983) এর বিনম্রতার রীতি অনুসরণ করা হয়েছে। একইসাথে বিনম্রতা ও বাককৃতি সম্পর্ক অনুধাবনের জন্য সার্ল (Scarle, 1969) এর বাককৃতি তত্ত্ব গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও দেখুন: