ট্রিয়ারের তত্ত্ব

আজকে আমাদের আলোচনার  বিষয়-ট্রিয়ারের তত্ত্ব

ট্রিয়ারের তত্ত্ব

বাদর্থিক ক্ষেত্র সম্পর্কে ট্রিয়ারের তত্ত্বটি প্রণিধানযোগ্য, যা উলম্যানের মতে বাগর্থবিদ্যার ইতিহাসে এক নূতন অধ্যায়ের উম্মোচন করেছে। টিচারের মতে, কোন ভাষার শব্দভান্ডার অর্থগত সম্পর্কের দিক দিয়ে একটি সংয়ের মধ্যে যুথবদ্ধ। সংশয়টি সবসময় পরিবর্তিত হচ্ছে এতে নতুন শব্দ যোগ হচ্ছে এবং পুরণো শব্দ হারিয়ে যাচ্ছে।

সংক্রয়ের ভিতর যে কোন একটি শব্দের পরিবর্তন পুরো সংশয়টিকে প্রভাবিত করে তার আসল পাল্টে দেয়। যেহেতু এ ধরনের পরিবর্তন সময়ে সাধিত হয় তাই বাগর্থবিদ্যার কাজ সাংগঠনিক ও ঐতিহাসিক উভয় দিক থেকে শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা করা। কোন শব্দের পরিবর্তনে একটি বাগধিক অঞ্চলে কিরূপ পরিবর্তন ঘটবে তা আগে থেকে বলা যায় না। এতে নীচের তিনটির মধ্যে কোন এক ধরনের পরিবর্তন অথবা অন্য যে কোন রকমের পরিবর্তন ঘটতে পারে :

 

ট্রিয়ারের তত্ত্ব

ট্রিয়ার দুটি ভিন্ন সময়ের জার্মান ভাষার জ্ঞানবিষয়ক শব্দাবলীর তুলনা করে দেখান ঐতিহাসিকভাবে বাগধিক অঞ্চলে কিভাবে পরিবর্তন সাধিত হয়। ট্রিয়ার দেখান যে ১২০০ খ্রীস্টাব্দের দিকে জার্মানে জ্ঞানবিষয়ক তিনটি শব্দ ছিল – Wisheit (l), Kunst ( শৈল্পিক জ্ঞান) ও List (ইবুদ্ধি) Wisheit বলতে একদিকে প্রজ্ঞা বোঝতো, অন্যদিকে সুকুমার অসুকুমার যে কোন জ্ঞানকে বোঝাতো।

একটি ছিল উচ্চ স্থানিক শব্দ যার ভিতরে Kunst ও List অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ১৩০০ খ্রীষ্টাব্দের দিকে Wisheit, Kunst Wizzen এই তিনটি শব্দ জ্ঞানের ধারণার এলাকাটি দখল করে। এবার Wisheit এর অর্থ হলো ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানসহ গভীর জ্ঞান, Kunst এর অর্থ মোটামুটি একই থাকলো এবং Wizzen এর অর্থ হলো অগভীর আটপৌরে জ্ঞান। জার্মানের জ্ঞানবিষয়ক শব্দাবলী ও তৎসংশ্লিষ্ট ধারণার এই এক শতাব্দীর পরিবর্তনকে এভাবে দেখানো যায়:

 

ট্রিয়ারের তত্ত্ব

 

ট্রিয়ারের মতে, কোন বাগধিক অঞ্চলের শব্দাবলী কালিক মাত্রার পুনঃদলবদ্ধ হয় এবং এই পুনঃদলবদ্ধতা আবার সমকালিক মাত্রায় বিশ্লেষণ করা যায়। যেহেতু বাগধিক অঞ্চলের এককগুলো পরম্পরসম্পৃক্ত সেহেতু অংশের পরিবর্তনে সমগ্রের পরিবর্তন সূচিত হয়।

 

ট্রিয়ারের তত্ত্ব

 

কাজেই দেখা যায় টিয়ারের তত্ত্বে ক্রমকালিক ও সমকালিক এই দুই আপাত বিরোধী ও বিপরীতমুখী অনুস্থাপনের সমন্বয় ঘটেছে। তার তত্ত্বে চলমানতা ও স্থিরতা এক বিন্দুতে সমাসীন হয়েছে। টিয়ারের নিজের ভাষায় – যেন “ইতিহাস সাংগঠনিকতার ভিতর দিয়ে নিজেকে উপলব্ধি করলো ” (history conceived in structural terms) (Ullmann 1957: 167).

আরও দেখুন:

 

Leave a Comment