Site icon Language Gurukul [ ভাষা গুরুকুল ] GOLN

সংজ্ঞা, প্রকারভেদ ও উদাহরণ

সংজ্ঞা, প্রকারভেদ ও উদাহরণ

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় “সংজ্ঞা, প্রকারভেদ ও উদাহরণ”। যা “ব্যাকরণ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত।

সংজ্ঞা, প্রকারভেদ ও উদাহরণ

 

সমাস

নামানং সমাসো যুক্তখো

বিভক্তিহীন শব্দকে নাম বলে। ঐ নামে বিভক্তি যুক্ত হলে তাকে পদ বলা হয়। যে সকল পদের সমাস হয়, তাদের প্রত্যেককে সমস্যমান পদ বলে। সমাস হলে যে পদ হয়, তার নাম সমাসান্ত বা সমস্ত পদ। সমাসের অর্থ বুঝাবার নিমিত্ত যে বাক্য বা পদগুলোর প্রয়োগ করতে হয় তাকে ব্যাসবাক্য, সমাস বাক্য বা বিগ্ৰ বাক্য বলে।

পরস্পর সম্বন্ধ বিশিষ্ট দুই বা বহুপদের একপদীভাব অর্থাৎ একত্রে যোগ করাকে সমাস বলে। পদগুলো একত্রে যুক্ত হলে পূর্বপদ বা পূর্বপদসমূহের বিভক্তি থাকে না। কেবল শেষের পদের বিভক্তি থাকে।

সমাসো সঞঞাবসেন ছব্বিধো ।

সমাস ছয় প্রকার। যথা :-

দ্বন্দ্বো, কৰ্ম্মধার, দিপু, তপুরিসো, বহুব্বীহি এবং অব্যযীভাবো।

দ্বন্দ্ব

নামানং সমুচ্চযো দ্বন্দ্বো

একই বিভক্তি যুক্ত দুই বা ততোধিক পদের যে সমাস হয়, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। দ্বন্দ্ব সমাসকে ব্যাসবাক্যে পরিণত করার সময় প্রত্যেক পদের পর ‘চ’ এই অব্যয় পদ যুক্ত করতে হয়। দ্বন্দ্ব সমাস দু’প্রকার। যথা-

ইতরেতর দ্বন্দ্ব ও সমাহার দ্বন্দ্ব।

ইতরেতর দ্বন্দ্ব :

এ সমাসে সমাসবদ্ধ শব্দটি বহুবচনান্ত হয় এবং শেষ পদ অনুযায়ী লিংগ ও বিভক্তি প্রাপ্ত হয়। যথা- সমণো চ ব্রাহ্মণো চ = সমব্রাহ্মণা; অগি চ ধূমো চ = অগ্‌গিধুমা; দেব চ মনুস্সো চ = দেবমনুস্সা; চন্দিমা চ সুরিযো চ = চন্দিম সুরিয়ো।

সমাহার দ্বন্দ্ব :

শেষের পদ যে লিংগের হোক না কেন সমাসবদ্ধ হয়ে শব্দটি যদি নপুংসক লিঙ্গ ও একবচন হয় তখন তাকে সমাহার দ্বন্দ্ব বলে। যথা : হখি চ অস্সা চ = হখিসং; জরা চ মরণং চ = জরামরণং। ইথি চ পুরিসো চ = ইথিপুরিসং; কাসী চ কোসলো চ = কাসিকোসলং ।

কৰ্ম্মধারয

দ্বিপদে তুল্যাধিকরণে কম্মধারয় সমাস গঠিত হয়। একই বস্তু জ্ঞাপক বিশেষ্য ও বিশেষণ পদে যে সমাস হয় তাকে কর্মধারয় সমাস বলে। এই সমাসে বিশেষণ পদ সাধারণত পূর্বে বসে। মহন্ত স্থানে মহা আদেশ হয়। মহন্তো + নদী = মহানদী।

কর্মধারয় সমাস নয় প্রকার ।

ক. বিশেষণ পূর্বপদ কর্মধারষ

এ সমাসে বিশেষণ পদ সকল সময় পূর্বে বসে। যথা : মহন্তো বীরো = মহাবীরো; মহন্তং ভয়ং – মহাভযং; মহন্তী গঙ্গা = মহাগঙ্গা; মহন্তো আচরিযো মহাচরিযো। –

খ. বিশেষণ পরপদ

এ সমাসে বিশেষ্য পদ বিশেষণ পদের পূর্বে না বসে পরে বসে। যথা : নরো সেঠো = নরসেঠো; সসো পণ্ডিতো = সসপণ্ডিতো; বুদধঘোসো আচরিয়ো = বুদধ-ঘোসাচরিযো।

গ. বিশেষণ উভয়পদ

এ সমাসে পূর্বপদ এবং উভয়পদ দুটিই বিশেষণ পদ হয়। যথা : বধিরো চ = অন্ধবধিরো; ছিন্নঞ্চ ভিন্নঞ্চ = ছিন্নভিন্নং । – সীতঞ্চ উগৃহঞ = সীতুণং; অন্ধো চ

ঘ. সম্ভাবনা পুষ্পদ কৰ্ম্মধার

এ সমাসে পূর্বপদ পরপদের সম্ভাবনা বা পূর্বপদের সহিত পরপদের সম্পর্ক ব্যক্ত হয়ে পরিষ্কারভাবে অর্থ বোধগম্য করার জন্য দু পদের মধ্যে ইতি, হুতা, সংখাতো ইত্যাদি কতকগুলো শব্দ ব্যবহৃত হয়। যথা : অনিচ্চ ইতি সঞা = অনিচ্চসঞঞা; হীন হুড়া সমতো হীনসমতো।

ঙ. উপমানুত্তরপদ কৰ্ম্মধারয

এ সমাসে পূর্বপদের সাথে পরপদের উপমা বা তুলনা করা হয়। যথা : সীহবি নরো – নরসীহো; উসভো বিষ নরো = সরোসভো; সাগরো বিষ বিনযো = বিনযসাগরো।

চ. অবধারণ পূর্বপদ কৰ্ম্মধারয

এ সমাসে পূর্বপদের অর্থই প্রাধান্য লাভ করে থাকে। ব্যাসবাক্যে এ সমাসে দু পদের মধ্যে ‘এর’ শব্দ ব্যবহৃত হয়। যথা গুণ এব ধনং = গুণধনং; পঞঞ এর পাসাদং পঞঞা পাসাদং। –

ছ. ন – নিপাত পুষ্পদ কৰ্ম্মধার

এ সমাসে ‘কু’ নিপাত সবসময় পূর্বপদের হিসাবে প্রযুক্ত হয়। স্বরবর্ণ পরে থাকলে ‘কু’ স্থানে কদ হয়। ব্যঞ্জন বর্ণের পূর্বে কু কখনো কখনো কা হয়। যথা : কু পত্তো – কুপুত্তো; কু অন্নো -কদন্নো, কু + পুরিসো কুপুরিসো বা কাপুরিসো। = ফর্মা ১৯, পালি, ৮ম শ্রেণি

জ. ন – নিপাত পূষ্পদ কৰ্ম্মধার –

এ সমাসে ন এ নিপাত পূর্বপদ হয়। স্বরবর্ণ পরে থাকলে ন স্থানে ‘অন’ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ পরে থাকলে ‘ন’ স্থানে ‘অ’ হয়, যথা ঃ ন অরিযো = অনরিখো; ন নীতি = অনীতি; ন নিচং = অনিচ্চং।

ঝ. প – আদি পূষ্পদ কৰ্ম্মধারয –

এ সমাসে ‘পা’ ‘প’ বা অন্য কোন উপসর্গ পূর্বপদ হয়। যথা ঃ পা বচনং পাবচনং; বিকল্প – বিকম্পো

সংখ্যাপূব্বো দ্বিগু

সংখ্যাবাচক শব্দ পূর্বে থেকে যে সমাস হয়, তাকে দ্বিগু সমাস বলে। দ্বিগু সমাস কর্মধারয় সমাসের প্রকারভেদ। কর্মধারয় সমাসে যেমন বিশেষ্য ও বিশেষণ পদের সমাস, সেরূপ দ্বিগু সমাসেও বিশেষ্য ও বিশেষণ পদের সমাস। দ্বিগু সমাস দু প্রকার; যথা ঃ সমাহার দ্বিগু ও অসমহার দ্বিগু ।

সমাহার দ্বিগু

এ সমাসে এককালে অনেক ব্যক্তি বা বস্তুর সমাহার বা সমষ্টি বুঝায় এবং সে সমষ্টিকে একটি বস্তু হিসাবে ব্যক্ত করে। এ সমাস একবচন ও নপুংসক লিঙ্গ হয়। যথা ঃ তযো লোকা = তিলোকং; তিন রতনানি : = তিরতনং; চতুন্নং সচ্চানং সমাহারো = চতুসচ্চং; দস সীলানি = দসসীলং ।

অসমাহার দ্বিগু

এ সমাসে ব্যক্তি বা বস্তুর সমাহার বা সমষ্টি না বুঝিয়ে বিভিন্নতা বর্তমান থাকে। যথাঃ- তযো ভবা—তিভব, চতুসো দিসা – চতুদ্দিসা, একো পুত্তো – একপুত্তো। 

 

 

তপুরিসো

অমাদযো পরপদেহি

যে সমাসে পূর্বপদ দ্বিতীয়া হতে সপ্তমী পর্যন্ত ছয় বিভক্তি যুক্ত তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। তৎপুরুষ সমাসে পরপদে প্রথমা বিভক্তি যুক্ত হয়। সমাস করলে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায়। পূর্বপদ যে বিভক্তিযুক্ত, তৎপুরুষ সমাস সে নামে অভিহিত হয়। তৎপুরুষ সমাস হয় প্রকার। যথা : দুতিষা তপুরিসো; ততিযা তল্লুরিসো; চতুর্থী তঞ্চুরিসো; পঞ্চমী তল্লুরিসো; ছটঠী তল্লুরিসো; সত্তমী তঞ্চুরিসো।

১। দ্বিতীয়া তল্লুরিসো

অরঞঞং গতো – অরঞঞগতো; সরণং গতো = সরণপতো; সোতং আপনো সোতপন্নো । –

২। ততিযা তল্লুরিসো

বুদ্ধেন ভাসিতং = বুদধভাসিতো; সীলেন সম্পন্নো = সীলসম্পন্নো; অগ্নিগনা দটো = অগ্নিগদভূতো।

৩। চতুর্থী তঙ্গুরিসো

সঙ্ঘস ভত্তং = সঙ্ঘভত্তং; লোক্‌সস হিতো = লোকহিতো; বুদ্ধস্স দেখাং = বুদ্ধদেখ্যাং ।

৪। পঞ্চমী তপপুরিসো

পাপেহি ভীতো = পাপভীতো; সাসনমা চুতো = সাসনচুতো; রুখমা পতিতো = রুক্‌খপতিতো।

৫। ছী তপুরিসো

ভিক্‌খুনং সঙ্ঘ = ভিক্ষুসঙঘো; ইথিযা লিঙ্গং ইথিলিঙ্গং, রঞ্ঞো পুত্তো = রাজপুত্তো

৬। সত্তমী তপুরিসো

নিব্বানে সুখং = নিবানসুখং; বিকালে ভোজনং – বিকালভোজনং; সংসারে দুখং = সংসারদুখং । =

৭। অলুত্ত তপ্‌পুরিসো

অলুত্ত তপ্‌পুরিসো সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় না; যথাঃ পভংকরো – পভংকরো; পরসূস পদং – পরসপদং ।

অব্যয়ীভাবো

উপসর্গ – নিপাত-পকো অব্যয়ীভাবো। অব্যয়পদ (উপসর্গ ও নিপাত) পূর্বে থাকলে পদের সাথে যে সমাস হয়, তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে। অব্যয়ীভাব সমাস নপুংসক লিঙ্গ ও একবচন হয়।

যথা : নগরস সমীপং = উপনগরং; কূলস সমীপং = উপকূলং; বনস সদিসং = উপবনং, নেত্তস সদিসং – উপনেত্তং; পচ্চেকং গেহং = পটিগেহ; অদ্ধমাসং অণু = অদ্ধমাসং; খুদ্দকং গহং = উপগৃহেং; সোতস = পটিলোমং = পটিসোতং; কূলস পটিলোমং – পটিকূলং; মরণং পরিযন্তং = আমরণং; জীবনং পরিযন্ত যাবজ্জীবনং; ভিক্খায় সমিদ্ধি = সুভিথং। =

বহুব্বীহি

অঞপদখেসু বহুব্বীহি

যে পদগুলোর সমাস হয় তাদের অর্থ ব্যক্ত না করে সমস্ত সমাস পদটি যখন অন্য পদের অর্থ ব্যক্ত করে, তখন তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। বহুব্রীহি সমাস অন্য পদের বিশেষণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। যে পদের বিশেষণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়, সে পদের লিংগ, বচন ও বিভক্তি প্রাপ্ত হয়। বহুব্রীহি সমাস প্রথমা হতে সপ্তমী পর্যন্ত যে কোন বিভক্তি যুক্ত হতে পারে। বিশেষণ হিসাবে ব্যবহৃত হলে দ্বন্দ্ব, কর্মধারয়, দ্বিগু, তৎপুরুষ, অব্যয়ীভাব ইত্যাদি সমাস পদও বহুব্রীহি সমাসের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে। নিম্নে বিভিন্ন ধরনের বহুব্রীহি সমাসের উদাহরণ দেওয়া গেল

নিন্দা উপগতো যো = নিন্দোপগতো (পুরিসো); দসবলানি যস সো = দসবলো (ভগবা); সমান ব্রহ্মচরিযা যসসো = সুব্রহ্মচারী (সমণো); উপনীতং ভোজনং যন্‌স সো = উপনীত ভোজনো (সমণো; মত্তা বহুবো মাতঙ্গ যস্মিং = মত্তবহুমাতঙ্গং (রণং); সাহস বিষ্ণু গতি যস সো = সীহগতি (রাজা); বিজিতো মারো যেন সো = বিজিতোমারো (ভগবা)।

ক) নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

সমাস কত প্রকার ও কী কী? প্রত্যেক প্রকার সমাসের দুটি করে উদাহরণ দাও।

কম্মধারয ও বহুব্বীহি সমাসের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর।

৩। নিম্নলিখিত সমাসগুলোর ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখ : মহাবীরো; অনরিযো; বিকালভোজনং; উপনগরং; দেবমনুস্সা; সাসনচুণ; তিরততোং জরামরণং; সীলসম্পন্নো নরসীহো; অন্ধবধিরো; মহাভযং; চতুসচ্চং।

(খ) সংক্ষেপে উত্তর দাও :

১। সমাস কাকে বলে?

2। দ্বন্ধ সমাস বলতে কী বোঝ?

৩। সমাহার দ্বিগু ও অসমাহার দ্বিগুর মধ্যে পার্থক্য কী?

81 সমস্যমান পদ ও সমস্ত পদ বলতে কী বোঝায়?

 

 

(গ) সঠিক উত্তরে টিক (V) চিহ্ন দাও :

১। দুই বা বহুপদের একপদীভাবকে কী বলা হয়?

ক. সমস্যমান পদ

খ. ব্যাসবাক্য

গ. সমস্তপদ

ঘ. সমাস

সমাহার দ্বিগু সমাসের উদাহরণ কোনটি?

ক. তিলোক

খ. একপত্তো

গ. নরসেঠো

ঘ. ছিন্নভিন্ন

৩। পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাসের উদাহরণ কোনটি?

ক. সরণগতো

খ. সংসারদুখং

গ. সোতাপন্নো

ঘ. পাপভীতো

81 পরপদে প্রথমা বিভক্তি হয় এবং পূর্বপদের যে বিভক্তি লুপ্ত হয় তাকে কোন্ সমাস বলে ?

ক. দ্বিগু

গ. দ্বন্দ্ব

খ. কর্মধারয়

ঘ. অব্যয়ীভাব

 

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version