আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় “বাচ্য পরিবর্তন”। যা “ব্যাকরণ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত।
বাচ্য পরিবর্তন
বাচ্য পরিবর্তন
বাচ্য তিন প্রকার। যথা- কর্তৃবাচ্য; কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্য ।
কর্তৃবাচ্য
কর্তৃবাচ্যে কর্তায় প্রথমা বিভক্তি যুক্ত হয়। কর্তা যে পুরুষ ও যে বচন, ক্রিয়াও সে পুরুষ ও সে বচন হয়।
যথা : – সো চন্দং পস্সতি । – সে চন্দ্র দেখে। –
কর্মবাচ্য
কর্মবাচ্যে কর্মে প্রথমা বিভক্তি হয়। কর্তায় তৃতীয়া বিভক্তি হয়। কর্মের যে বচন এবং পুরুষ ক্রিয়ারও সে বচন ও পুরুষ হয় । যথা ঃ দারকেন চন্দং দিস্সতি। – বালক কর্তৃক চন্দ্ৰ দৃষ্ট হচ্ছে।
ভাববাচ্য
ভাববাচ্যে কর্মের ভাবই প্রধানভাবে প্রতীয়মান হয়। কর্তায় তৃতীয়া বিভক্তি হয়। ক্রিয়া সবসময়ই প্রথম পুরুষ এবং একবচন হয়। ক্রিয়ার কোন কর্ম থাকে না। যথা : তেন হসিয়তে তাকে হাসতে হবে। তেন সুযতে তার দ্বারা শুত।
কর্মবাচ্যে ধাতুর উত্তর য প্রত্যয় যুক্ত হয়। অতঃপর ক্রিয়া বিভক্তি যুক্ত হয়ে ক্রিয়া গঠিত হয়। ‘য’ প্রত্যয় যুক্ত হলে ধাতুর নিম্নলিখিত পরিবর্তন হয়। যথা ঃ
১। ব্যঞ্জনান্ত ধাতু ‘য’ প্রত্যয়ে যুক্ত হয়ে দ্বিত্ব প্রাপ্ত হয়।
যথা : √পচ্ + য + তে = পচ্চতে; √বচ্ + য + তে = বচ্চতে; হন্ + য + তে = হঞ ঞতে; দিব্ + য + তে = দিব্বতে; / লঙ্ + য + তে = লৰ্ভতে; //দিস্ + য + তে = দিসতে; √গম্ + য + তে = গম্মতে;
২। ধাতুর অন্ত্যস্বর আ কিংবা ই হলে আ এবং ই স্থানে ঈ হয়। যথা : /দা + য + তে = দীযতে;/পা + য + তে = পীযতে;/জি + য + তে = জীযতে;/চি + য + তে = চীযতে;/সু + য + তে = সুযতে;/ঠা + গয + তে = ঠাযতে; /হা + য + তে + হীযতে; /লা + য + তে = লীযতে;
৩। ধাতুর অন্ত্যস্বর সংযুক্ত ব্যঞ্জন বর্ণ ‘স’ বা ‘র’ হলে ‘য’ প্রত্যয় যোগ করার আগে ঈ যোগ করতে হয়। যথা : পুচ্চ + য + তে = পুচ্ছীয়তে; হস্ +য + তে = হসীযতে;/ কর্ + য + তে = করীযতে;
৪। ‘য’ প্রত্যয় পরে থাকলে কর্মবাচ্যে ও ভাববাচ্যে ধাতুর অন্তস্থিত হ্রস্ব ই-কার ও হ্রস্ব উ-কার দীর্ঘস্বর হয়। যথা :/জি + য + তে = জীযতে;/চি + য + তে = চীযতে; /সু + য + তে = সূযতে;
৫। ‘য’ প্রত্যয় পরে থাকলে কখনও কখনও কর্মবাচ্যে ও ভাববাচ্যে ধাতুর অন্তঃস্থিত দীর্ঘ ঈ-কার ও দীর্ঘ উ-কার এ দুটো বর্ণের কোন পরিবর্তন হয় না। যথা V+ য + তে ভূযতে √ + য + তে = যতে;
√ নী + য + তে + নীযতে, সী + য + তে = সীযতে ।
৬। ‘য’ প্রত্যয় পরে থাকলে কর্মবাচ্যে ও ভাববাচ্যে ‘যজ’ ধাতুর য-কারের স্থানে হ্রস্ব ই-কার আদেশ হয়। যথা :
যজ্ + য + তে = ইজ্জতে।
৭। ‘য’ প্রত্যয় পরে থাকলে ধাতুর অন্ত্য সংযুক্ত বর্ণ ‘স’ অথবা ‘র’ এর পূর্বে দীর্ঘ ঈ-কার আগম হয়। যথা :
√পুচ্ছ + য + তে = পুচ্ছীযতে; / সর + য + তে = সরীযতে; / হিস + য + তে = হসীযতে; বিস্ + য + তে = বসীযতে।
৮। কর্মবাচ্যে ও ভাববাচ্যে বচ্, বপ্, বস্, বহু প্রভৃতি ধাতুর ব-কারের স্থানে হ্রস্ব উ-কার আদেশ হয়। আবার ব-কারের সঙ্গে হ্রস্ব উ-কারও যোগ হয়। হ-কারের পর ‘য’ প্রত্যয় যোগ করলে ‘য্হ’ হয়। যথা : √বচ্ + য + তে = বুচ্চতে; √ বস্ + য + তে = বুসতে; / বপ্ + য + তে = বুপ্পতে; / বহ্ + য + তে = বুযহতে।
বাচ্য পরিবর্তনের কয়েকটি উদাহরণ
বাচ্য পরিবর্তনের কয়েকটি উদাহরণ
কর্তৃবাচ্য
থেরো ধম্মং দেসেতি।
স্থবির ধর্ম দেশনা করছেন। লুব্ধ মিগং হনতি ।
শিকারী মৃগ বধ করছে।
দুহিতা দুদ্ধং দুহতি।
কন্যা দুধ দোহন করছে।
দাসী উদকং উদ্ধারেতি।
দাসী জল তুলছে।
সো চন্দং পস্সতি।
সে চন্দ্র দেখে।
সূদো ওদনং পচতি।
পাচক ভাত পাক করছে।
কর্মবাচ্য
থেরেন ধম্মং দেসিয়তে।
স্থবির কর্তৃক ধর্ম দেশিত হচ্ছে।
লুদ্ধকেন মিগং হঞঞতে।
শিকারী কর্তৃক মৃগ বধ হচ্ছে।
দুহিতায় দুদ্ধং দুহাযতি।
কন্যা কর্তৃক দুধ দোহন করা হচ্ছে।
দাসীয়া উদকং উদ্ধারিযতে।
দাসী কর্তৃক জল উত্থিত হচ্ছে।
তেন চন্দং দিসতে।
তার দ্বারা চন্দ্র দৃষ্ট হয়।
সূদেন ওদনং পচ্চতে।
পাচক কর্তৃক ভাত পাক করা হচ্ছে।
গোপালো গাবি খীরং দোহতি।
রাখাল গাভীর দুধ দোহন করছে।
গোপালেন গো খীর দুহাতে।
দাসো ভারং গামং নযতি।
রাখাল কর্তৃক গাভী থেকে দুধ দোহন করা হচ্ছে।
চাকর গ্রামে ভার বহন করে নিচ্ছে।
দাসেন ভারো গামং নীযতে। চাকর কর্তৃক গ্রামে ভার বহন করে নেওয়া হচ্ছে।
আরও দেখুনঃ