আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-ভাইনরাইখের তত্ত্ব
ভাইনরাইখের তত্ত্ব
ইউরিয়েল ভাইনরাইখ (১৯৭২) ক্যাটজ ও ফোডরের তত্ত্বের সমালোচনা করে একটি বিকল্প ব্যাখ্যামূলক তত্ত্ব প্রগঠন করেন। তার মতে একটি বাগার্থিক তত্ত্বের উদ্দেশ্য হলো পরিপূর্ণভাবে বর্ণিত বাক্যের উপাদানসমূহের অর্থ থেকে কিভাবে পুরো বাক্যের অর্থ আহরিত হয় তা বিশ্লেষণ করা।
ভাইনরাইখের তত্ত্ব অনুসারে একটি ব্যাকরণের ভিত্তি গঠিত হয় একগুচ্ছ পুনরাবৃত্তিমূলক ক্ষমতাসম্পন্ন শাখাবিভক্তি নিয়মের সমন্বয়ে। এই নিয়মগুলো ব্যাখ্যাত হয় তিন ধরনের প্রতীকের দ্বারা – শ্রেণী প্রতীক জটিল প্রতীক এবং ফাঁপা প্রতীক। শ্রেণী প্রতীকের মধ্যে পড়ে বিশেষ্য শব্দগুচ্ছ, ক্রিয়া, বিশেষণ ইত্যাদি ।
জটিল প্রতীক হলো বাগথিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত শ্রেণী প্রতীক । ফাঁপা প্রতীক হলো রূপমূল বা শব্দ আরোপনের নির্দেশ । ফাঁপা প্রতীক তিনটি – BA এবং O এবং এগুলোতে সকল শ্রেণী প্রতীক মানচিত্রায়িত হয় । ভিত্তি প্রান্তিকপূর্ব সারি উৎপাদন করে। প্রান্তিকপূর্ব সারি গঠিত হয় ফাঁপা প্রতীকের অনুক্রম এবং সংশ্লিষ্ট বা জটিল প্রতীকের বৃক্ষচিত্র সহযোগে। যেমন (Weinreich 1972 81 )
→ অপসারিত হতে পারে বৃহৎ শ্রেণীর (যেমন বিশেষ্য, বিশেষণ, ক্রিয়া) রূপমূল দ্বারা, 4 অপসারিত হতে পারে ক্ষুদ্র শ্রেণীর (যেমন ডিটারমিনার, বচন, কাল) রূপমূল দ্বারা এবং কোন রূপমূল দ্বারা অপসারিত হতে পারে না । ভিত্তি থেকে উৎপাদিত অভিধানের শব্দাবলীসহ প্রান্তিকপূর্ব সারি শাব্দিক নিয়মাবলীর ইনপুট ।
অভিধান হলো অবিন্যস্ত রূপমূলের সমষ্টি। অভিধানের একেকটি শব্দ বা এটি বিত্ব (P, G, 1 ) হিসাবে রূপায়িত, যেখানে P হলো ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, G হলো বাক্যতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য এবং 1 হলো বাগধিক বৈশিষ্ট্য । শাব্দিক নিয়ম প্রতীকসমূহের উপর ক্রিয়া করে তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে মন্ডিত করে।
কাজেই শাব্দিক নিয়মের আউটপুট হিসাবে বেড়িয়ে আসে একটি সাধারণীকৃত গঠনচিত্র যেখানে সন্নিবেশিত থাকে রূপমূলের সারি এবং ফাঁপা প্রতীক। যেমন (Weinreich 1972 97
সাধারণীকৃত গঠনচিত্র এরপর দ্বিবিধ প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হয়। একদিকে এর উপর প্রযোজ্য হয় ব্যাকরণের রূপান্তরমূলক নিয়ম ও রূপম্বনিমূলীয় নিয়ম যার ফলে তা উপনীত হয় উপরি সংগঠনের ধ্বনিতাত্ত্বিক স্তরে । অন্যদিকে সাধারণীকৃত গঠনচিত্র বাগার্থিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করে।
এই প্রক্রিয়ার দুটি অংশ – এবং বাদর্শিক মূল্যায়ক । গনকের কাজ হলো বৃক্ষচিত্রের শাখাসমূহে বাগার্থিক বৈশিষ্ট্য বণ্টন করা, বাগধিক বৈশিষ্ঠ্য সমূহের স্ববিরোধ সনাক্ত করা, পৌনপুনিক বৈশিষ্ট্যসমূহকে একত্রীভূত করা, কতক বৈশিষ্ট্য এক রূপমূল থেকে অন্য রূপমূলে স্থানান্তর করা এবং অন্তর্নিহিত গঠনচিত্রের অপ্রয়োজনীয় অংশকে বাদ দেয়া। মুল্যায়কের
কাজ হলো পরিপার্শ্বের উপর নির্ভর করে বাক্যের স্বাভাবিকতা বা বিচ্যুতি নির্ণয় করা এবং বাক্যের একটি ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যা ধুনিক ঘটনার সাথে যুগপৎ হবে, অথবা একটি অর্থহীন সংকেতনা নির্গত করা যা কোনভাবে ব্যাখ্যাত হবে না । এভাবে আলোচ্য ক্ষেত্রে আমরা একটি সুনির্দিষ্ট অর্থসহ পূর্ণাঙ্গ ইংরেজী বাক্য পাই :
These boys found a car somewhere.
পুরো ভাষিক প্রক্রিয়াটিকে একটি চিত্রের মাধ্যমে দেখানো যায় :
ক্যাটজের তত্ত্বের সাথে ভাইনরাইখের তত্ত্বের তেমন মৌলিক পার্থক্য নেই। ডাইনরাইখ তাত্ত্বিক বর্ণনায় কিছু অভিনবত্ব এনেছেন, যেমন প্রক্ষেপন নিয়মের পরিবর্তে ডাইনরাইব বাার্থিক গনক ও বাগার্থিক মূল্যায়কের প্রবে করেছেন ।
ভাইনরাইখ দাবি করেন বাগধিক মূল্যায়ক এতটা শক্তিশালী যে এর মাধ্যমে ভাষার শৈলিগত অর্থ (আলংকারিক অর্থসহ)ও বিশ্লেষণ করা সম্ভব। বাগথিক মূল্যায়কের মূল্যায়ন করতে গিয়ে লেহরার (১৯৭৪: ৫৮) বলেন :
“ভাষিক তত্ত্বে বাগধিক ব্যাখ্যার এই দিকটি অন্তর্ভূক্ত করে ভাইনরাই সম্ভবতঃ ঠিক কাজটিই করেছেন । এটি বর্ণনামূলক কাজে অধিকতর পারঙ্গম। এর দ্বারা বিচার করা সম্ভব বিভিন্ন পদশ্রেণীর শব্দব্যবহারে অভিনবত্ব সামনাসাপুর্ণরূপে ব্যাখ্যাত হয় কিনা এবং যদি হয়ে থাকে, তখন কোন ধরনের শর্তাবলী ব্যাখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে।”
আরও দেখুন: