Site icon Language Gurukul [ ভাষা গুরুকুল ] GOLN

ভূমিকানাভিনয়, মাথা খাটানো, সমস্যা সমাধান, একক কাজ, জোড়ায় কাজ ও দলীয় কাজ

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ভূমিকানাভিনয়, মাথা খাটানো, সমস্যা সমাধান, একক কাজ, জোড়ায় কাজ ও দলীয় কাজ – যা আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের পাঠদান পদ্ধতি ও কলাকৌশল এর অন্তর্ভুক্ত।

Table of Contents

Toggle

ভূমিকানাভিনয়, মাথা খাটানো, সমস্যা সমাধান, একক কাজ, জোড়ায় কাজ ও দলীয় কাজ

 

 

বর্তমানে শ্রেণি শিক্ষাদানে যে সকল অংশগ্রহণমূলক আধুনিক শিক্ষণ-শেখানো পদ্ধতি ও কৌশল কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয় তার মধ্যে ভূমিকাভিনয়, মাথা খাটানো, সমস্যা সমাধান পদ্ধতি এবং একক কাজ, জোড়ায় কাজ ও দলীয় কাজ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে কর্মতৎপর রেখে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা লাভের অনুষঙ্গ হিসেবে এ সকল পদ্ধতি ও কৌশল বহুল প্রচলিত। এ সকল পদ্ধতির সফল প্রয়োগের ফলে পাঠ্য বিষয় সহজবোধ্য হয়। শিখন আনন্দদায়ক ও সতস্ফুর্ত হয়। তাই আরবি শিক্ষকের এ সকল পদ্ধতির প্রয়োগ সম্পর্কে সুসংহত ধারণা অর্জন করা প্রয়োজন।

ভূমিকাভিনয়

শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য বিষয়বস্তুকে আকর্ষণীয় করার জন্য অভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলে তাকে ভূমিকাভিনয় বলে। পাঠ্য বিষয়কে নাটক আকারে রূপান্তরিত করে অভিনয়ের মাধ্যমে পাঠদানের ব্যবস্থা প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে।

শ্রেণিতে পঠন-পাঠনোর একঘেয়েমি দূর করার উদ্দেশ্যেই এ পদ্ধতির উদ্ভব। ছোট শিশুরা অত্যন্ত অনুকরণ প্রিয় তারা নাটক দেখতে শুনতে ভালোবাসে। স্বতস্ফুর্তভাবেই তারা এসব করে থাকে। তাদের এ স্বতঃস্ফুর্ত আগ্রহকে শিখন-শেখানোর কাজে প্রয়োগ করলে অধিক সুফল পাওয়া যায়। আরবি ভাষা ও সাহিত্যের অনেক বিষয়বস্তু উপস্থাপনে বিশেষত )!ও -এর পাঠ উপস্থাপনে ভূমিকাভিনয় অধিক কার্যকর হতে পারে। এ পদ্ধতিতে পাঠ উপস্থাপন করা হলে শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে উপভোগ করে ও শিক্ষা গ্রহণে আন্তরিক হয়।

ভূমিকাভিনয় পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য

উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যতীত আপনি নিজে ভূমিকাভিনয় পদ্ধতির আর কী কী বৈশিষ্ট্য যোগ করতে পারেন?

ভূমিকাভিনয় পদ্ধতির সুবিধা

ভূমিকাভিনয় পদ্ধতির অসুবিধা

মাথা খাটানো পদ্ধতি

শিক্ষার্থীদের মুক্ত চিন্তার সুযোগ দিয়ে সমস্যা সমাধানে উদ্বুদ্ধ করার প্রক্রিয়াই হলো মাথা খাটানো পদ্ধতি। মাথাখাটানো পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মাথায় চিন্তার ঝড় বা আলোড়ন সৃষ্টি করা হয়। যে পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের সামনে কোনো সুনির্দিষ্ট সমস্যা উপস্থাপন করে তাদের তাৎক্ষণিক চিন্তা করার সুযোগ দেওয়া হয় এবং তাদের চিন্তা ভাবনাকে একক, জোড়ায় বা দলগতভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট করা হয় তাকে মাথা খাটানো বা ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতি বলে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় রাখার ক্ষেত্রে চিন্তামূলক এ পদ্ধতি খুবই কার্যকর

মাথা খাটানো পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য

মাথা খাটানো পদ্ধতির সুবিধা

সমগ্র শ্রেণিতে একই সময়ে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়।

সকল শিক্ষার্থী সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারে।

শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ পায়। • জটিল সমস্যার সহজ সমাধানে শিক্ষার্থীরা উদ্বুদ্ধ হয়।

এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের চিন্তা, কল্পনা শক্তি ও সৃজনশীলতার উৎকর্ষ সাধন করে।

পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ হয়।

অল্প সময়ের মধ্যে অধিক শিখন নিশ্চিত হয়।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হয় ।

এই পদ্ধতি সকল বিষয়ের পাঠদানে প্রয়োগ করা যায়।

শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে প্রাণবন্ত থাকে ও পাঠে মনোযোগী হয়।

শিক্ষার্থীদের বুদ্ধি প্রবণতা জানা যায় ।

মাথা খাটানো পদ্ধতির অসুবিধা

সমস্যা সমাধান পদ্ধতি

যে প্রক্রিয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শিক্ষা সংক্রান্ত কোনো সমস্যা সমাধানে ক্রিয়াশীল হয় তাকেই সমস্যা সমাধান পদ্ধতি বলে। এটি শিক্ষণ শিখনের একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। আরবি বিষয়ের পাঠ উপস্থাপনে সমস্যা সমাধান পদ্ধতির যথেষ্ট উপযোগিতা রয়েছে। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পূর্বজ্ঞান ও ধারণার ভিত্তিতে পাঠ্য বিষয় সংশ্লিষ্ট কোনো সমস্যা নির্বাচন করা হয়।

পাঠ উপস্থাপনকালে শিক্ষক তাঁর বক্তৃতা ও আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীদের সামনে সমস্যাটির অবতারণা করেন। এর সমাধান শিক্ষার্থীদের আগে থেকে জানা থাকে না। প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার সামর্থ অনুযায়ী বিভিন্ন উপায়ে সমস্যাটি অনুধাবন ও সমাধানের চেষ্টা করে। শিক্ষক একটি উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেন যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের চেষ্টায় সমাধান করতে উদ্বুদ্ধ হয়। এবং প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে একটি যৌক্তিক সমাধানে
পৌঁছতে পারে।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য

এবার সমস্যা সমাধান পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় ধাপগুলো চিন্তা করে বলুন।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সুবিধা

সমস্যা সমাধান পুদ্ধতির অসুবিধা

একক কাজ

শিক্ষক কর্তৃক শ্রেণি পাঠদানে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে স্বতন্ত্রভাবে চিন্তা, অনুভুতি, কথা ও কাজ করতে দেয়াকে একক কাজ বলা হয়। অপেক্ষাকৃত সহজ এবং ছোট কাজ যা সমাধান করতে কম সময়ের প্রয়োজন হয় এমন কাজকেই একক কাজের জন্য নির্বাচন করা হয়। যেমন- পঠিত কবিতা বা গদ্য থেকে অপরিচিত শব্দ বের করা, Jai বের করা, pulও Jai-এর পার্থক্য নির্ণয় করা, ১২০ পরিবর্তন করা, কোনো শব্দের এর করা ইত্যাদি।

এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের স্বতন্ত্রভাবে চিন্তা করে কোনো প্রশ্নের উত্তর বের করতে বলা হয়। নির্ধারিত সময় শেষে শিক্ষক প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রাপ্ত একই বিষয়ের বিকল্প উত্তরগুলো থেকে অপেক্ষাকৃত সঠিক উত্তরটি বাছাই করে সিদ্ধান্তে উপনীত হন।

একক কাজের বৈশিষ্ট্য

 

 

একক কাজের সুবিধা

একক কাজের অসুবিধা

জোড়ায় কাজ

শ্রেণি পাঠনে দুইজন শিক্ষার্থীর একত্রে কোনো একটি বিষয় নিয়ে কাজ করার প্রক্রিয়াই হলো জোড়ায় কাজ। এই পদ্ধতিতে পাশাপাশি অথবা মুখোমুখি দুইজন শিক্ষার্থী নিয়ে এক একটি জোড়া গঠন করে একটি সমস্যার সমাধানে কাজ করতে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা জোড়ায় আলোচনা করে সমাধান/উত্তর খাতায় লিখবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা একে অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিবে। শিক্ষক কয়েক জোড়া শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে সমাধানের/উত্তরের উত্তম বিকল্পটি বেছে নিবেন এবং প্রয়োজনীয় ফলাবর্তন দিবেন।

জোড়ায় কাজের বৈশিষ্ট্য

জোড়ায় কাজের উল্লিখিত বৈশিষ্টগুলো ছাড়া আপনি আর কী কী যোগ করতে পারেন?

জোড়ায় কাজের সুবিধা

জোড়ায় কাজের অসুবিধা

দলগত কাজ

শিখন-শেখানো কার্যক্রমে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো দলীয় কাজ। এই পদ্ধতিতে একই পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে পরস্পর মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করে। এক্ষেত্রে শিক্ষকের তুলনায় শিক্ষার্থীরাই বেশি সক্রিয় থাকে। তবে মডারেটর বা গাইড হিসেবে শিক্ষকের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।

দলগত কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দক্ষতার পাশাপাশি কিছু মানবিক ও সামাজিক গুণাবলির ও বিকাশ ঘটে। এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক কয়েকটি দলকে তাদের কাজ উপস্থাপন করতে বলবেন এবং শ্রেণির অন্য শিক্ষার্থীদের ফলাবর্তনের সুযোগ দিবেন। প্রয়োজনে শিক্ষক নিজেও ফলাবর্তন দিবেন। বর্তমানে সারা বিশ্বে শিক্ষণ শিখনের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতির ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে।

দলগত কাজের বৈশিষ্ট্য

দলগত কাজ-এর সফল বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষককে কোন কোন বিষয়ের উপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে?

দল গঠন প্রক্রিয়া

বিভিন্ন পদ্ধতিতে দল গঠন করা যায় যেমন:

দলগত কাজের সুবিধা

দলগত কাজের অসুবিধা

 

 

মূল্যায়ন

১. ভূমিকাভিনয় পদ্ধতির পরিচয় দিন

২. ভূমিকাভিনয় পদ্ধতির সুবিধা এবং অসুবিধা বর্ণনা করুন।

৩. মাথা খাটানো পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।

৪. মাথা খাটানো পদ্ধতির সুবিধাগুলো লিখুন।

৫. সমস্যা সমাধান পদ্ধতি কী?

৬. সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সুবিধাগুলো উল্লেখ করুন ।

৭. একক কাজের সুবিধা এবং অসুবিধা বর্ণনা করুন।

৮. জোড়ায় কাজের বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা উল্লেখ করুন।

৯. দল গঠনের প্রক্রিয়া বর্ণনা করুন।

১০. দলগত কাজের সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ করুন ।

আরও দেখুনঃ

 

Exit mobile version