আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ” যমক বগৃগো “। যা “ধম্মপদ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত।
যমক বগৃগো
যমকবগগো
১।মনোপুংগমা ধম্মা মনোসেঠা মনোময়া,
মনসা চে পদুঠেন ভাসতি বা করোতি বা,
ততো মং দুগ্ধমন্বেতি চক্কং’ব বহুতো পদং ।
২।মনোপুংগমা ধম্মা মনোসেঠা মনোময়া,
মনসা চে পসন্নেন ভাসতি বা করোতি বা,
ততো নং সুখমন্বেতি ছায়া’ব অনপাখিনী।
৩।অর্থকোচ্ছি মং, অবধি মং, অজিনি মং,
অহাসি যে, যে চ তং উপনয্হন্তি, বেরং তেসং ন সম্মতি।
8।অকোচ্ছি মং, অবধি মং, অজিনি মং, অহাসি যে,
যে চ তং ন উপনস্হন্তি, বেরং তেসূপসম্মতি।
৫।নহি বেরেন বেরানি সম্মন্তী’ধ কদাচনং,
অবেরেন চ সম্মতি এস ধম্মো সনস্তনো।
৬। পরে চ ন বিজানন্তি মযমেখ যথামসে,
যে চ তথ বিজানন্তি, ততো সম্মন্তি মেঘগা।
৭।সুভানুপসৃসিং বিহরস্তং, ইন্দ্রিযেসু অসংবৃতং,
ভোজনমূহি চ অমত্তঞঞং কুসীতং হীনবীরিযং,
তং বে পসহিত মারো বাতে, রুখবে দুব্বলং।
৮।অসুভানুপসৃসিং বিহরঙং, ইন্দ্রিযেসু সুসংবৃতং,
ভোজনমূহি চ মত্তঞঞং, সদধং, আরদধবিরিযং,
তং বে নপ্পসহতি মারো বাতো সেলং’ব পৰ্ব্বতং ।
৯।অনিসাবো কাসাবং যো বখং পরিদহেসতি,
অপেতো দমসচ্চেন ন সো কাসাবমরহতি।
১০যো চ বস্তুক সাবস সীলেসু সুসমাহিতো,
উপেতো দমসচ্চেন, সোবে কাসাবমরহতি।
১১।অসারে সারমতিনো, সারো চাসারদ সিনো,
তে সারং নাধিগচ্ছন্তি, মিচ্ছাসংকপ্পগোচরা।
১২।সারঞ্চ সারতো জ্ঞতা, অসার অসারতো,
তে সারং নাধিগচ্ছন্তি সম্মাসংকপ্পগোচরা।
১৩।যথাগারং দুচ্ছনং বুঠি সমতিবিজ্ঝতি,
এবং সুভাবিতং চিত্তং রাগো সমতিবিজ্ঝতি।
১৪ । যথাগারং সুচ্ছনং, বুট্ঠি ন সমতিবিজ্ঝতি,
এবং সুভাবিতং চিত্তং রাগো ন সমভিবিজ্ঝতি।
১৫। ইধ সোচতি, পেচ্চ সোচতি, পাপকারী উভয়খ সোচতি,
সো সোচতি সো বিহাতি,
দিয়া কৰ্ম্মকিলিঠমত্তনো।
ইধ মোদতি, পেচ্চ মোদতি,
১৬। কতপুঞো উভয়থ মোদতি; সো মোদতি,
সো পমোদতি দিয়া কৰ্ম্মবিসুদিধমত্তনো।
১৭।ইধ তপতি, পেচ্চ তপপতি
পাপকারী উভয়থ তপতি,
পাপং মে কতংতি তপতি,
ভিয্যো তপতি দুগ্গতিং গতো।
১৮।ইধ নন্দতি, পেচ্চ নন্দতি
কতপুঞো উভয়থ নন্দতি,
পুঞঞং যে কতন্তি নন্দতি,
ভিয্যে নন্দতি সুগৃগতিং গতো।
১৯।বহুংপি চে সহিতং ভাসমানো
ন তক্করো হোতি নরো পমত্তো,
গোপো’ৰ গাবো গণয়ং পরেসং
ন ভাগবা সামঞঞস হোতি ।
২০।অপম্পি চে সহিতং ভাসমানো
ধম্মস্স হোতি অনুধম্মচারী,
রাগং চ দোসং চ পহায মোহং,
সমপজানো সুবিমুক্তচিত্তো অনুপাদিয়ানো ইধ বা হুরং বা,
সোভ গবা সামঞঞস হোতি ।
শব্দার্থ
পুংগমা – পূর্বগামী; মনোসেট্ঠা – মনই শ্রেষ্ঠ; পদুটঠেন দোষযুক্ত, দুক্খমনৃেতি (দুক্খং + অন্বেতি) – – দুঃখ অনুসরণ করে; করোতি করে; ভাসতি কথা বলে; চক্কর চাকার ন্যায়, পদ পা; পসন্নেন – – – – প্রসন্ন মনে; সুখমন্নোতি (সুখং + অন্বেতি) সুখ প্রদান করে; অনুপাযিনী – অবিচ্ছিন্ন; অকোচ্ছি – অক্রোশ – করল;
বধি মারল; জিনি জয় করল; অহাসি হরণ করল; উপনস্হন্তি – পোষণ করে; বেরং – – – – শত্রুতা; ন সম্মতি – উপশম হয় না; কুদাচনং – কখনও; সনন্তনো সনাতন, প্রচলিত প্রথা, ন বিজনস্তি – জানে না; মযমেখ (মযং + এথ) – আমরা এখানে; সমামসে মৃত্যুর দিকে মেধগা – শত্ৰুতা। – – – –
সুভানুপসিং শোভাদর্শী; অসংবৃতং অসংযত : অমত্তং মাত্রাজ্ঞানহীন; বিহরন্তং – রত থাকে; – – কুসীতং – আলস্যপরায়ণ; হীনবিরিযং – হীনবীর্য; পসহতি – বশীভূত করে; সপ্তমং – শ্রদ্ধাবান; বাতো – – বাত্যাহত; রুকখং – বৃক্ষ; অরন্ধবীরিহ আরবীর্য; সেলং’ব শিলাময়; অনিসাবো – কামরাগাদিতে কলুষযুক্ত;
কাসাবং কাষায়বত্র, গৈরিকবত্র; পরিদহেসতি পরিধান করবে; অপেতো দমসচ্চেন – – সত্য ও দমগুণবিহীন; ন অরহতি – উপযুক্ত নয়; বস্তুকসাবস কলুষমুক্তের; সারে চাসারদ সিনো – – সারকে অসার মনে করে; নাধিগচ্ছতি লাভ করে না; মিচ্ছাসংকপ্পগোচরা মিথ্যাকল্পনাবিলাসীরা; – অধিগচ্ছতি লাভ করে; যথা গারং – গৃহ যেমন; দুচ্ছ – সুভাবিতং – সাধনাযুক্ত; বিজাতি – প্রবেশ করে। – – ভালভাবে আচ্ছাদিত নয়; বুট্ঠি – বৃষ্টি
পেচ্চ – পরে (পরলোকে); সোচতি – অনুশোচন করে; উভয়থ – উভয়লোকে; কৰ্ম্মকিলিঠমত্তনো — মন্দ – কর্মের ফল দেখে; বিহঞ্ঞতি – মর্মাহত হয়; মোদতি আনন্দ লাভ করে; কৰ্ম্মবিসুদ্ধিমত্তনো — কর্মশুদ্ধি – – দেখে; তপতি – মনস্তাপ ভোগ করে; দুগগতি – দুর্গতি; নন্দতি – আনন্দিত হয়; তক্করো – অধিকারী; গোপো’ব রাখাল যেমন; সামঞঞস – শ্রামণ্যের।
সারাংশ
যমক বর্গের গাথাগুলো পরস্পর ভিন্নমুখি ভাব প্রকাশ করে। একটি ঊর্ধ্বদিকে, অন্যটি নিম্নদিকে। পাপ-পুণ্য দুটিই নির্দেশ করে। এজন্য এ বর্গের নাম দেওয়া হয়েছে ‘যমক’ বা ‘যমজ’।
মন ধর্মসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ও পূর্বগামী। খারাপ মনে কোন কাজ করলে দুঃখ প্রদান করে। ভারবাহী পশু গাড়ির চাকা অনুসরণ করে। সেরূপ দুঃখও মানুষের নিত্য সহচর হয়। ভাল কাজ করলে সুখ মানুষের ছায়ার মত সঙ্গে সঙ্গে থাকে।
শত্রুতার দ্বারা শত্রুতার উপশম হয় না। মিত্রতার দ্বারাই শত্রুতার অবসান হয়। অক্রোধের দ্বারা ক্রোধকে দমন করা যায়। ‘আমাকে আক্রমণ করল, আমার নিন্দা করল, আমাকে পরাজিত করল, – এরূপ চিন্তা করা ঠিক নয়। তাতে আক্রোশ শান্ত হয় না। বরঞ্চ বেড়ে যায়। ক্ষমা ও সহিষ্ণুতার দ্বারাই আক্রোশভাব প্রশমিত হয়।
বাইরের সৌন্দর্য খুঁজে বেড়ালে ইন্দ্রিয় সংযত হয় না। এতে ভোগের লালসা বৃদ্ধি পায়। দুর্বল বৃক্ষের ন্যায় মার তাকে পরাস্ত করে। যে কায়, বাক্য ও মন সংযত করে, পরিমিত আহার করে, বীর্যবান হয় মার তাঁকে পরাভূত করতে পারে না। তিনি শিলাময় পর্বতের ন্যায় দৃঢ় থাকেন।
যে কামরাগ দমন করতে পারে না, সে গৈরিক বসন ধারণের অনুপযুক্ত। যাঁর ইন্দ্রিয় সংযত, শীলে প্রতিষ্ঠিত এবং সত্যবাদী তিনি গৈরিকবত্র ধারণের উপযুক্ত।
যারা সারকে অসার এবং অসারকে সার মনে করে তারা মিথ্যায় আচ্ছন্ন থাকে। কারণ, তারা সারবস্তু লাভ করতে পারে না। সাধনাবিহীন চিত্তে কামরাগ প্রবেশ করে। সাধনাযুক্ত মনে বিষয়বাসনা প্রবেশ করতে পারে না। পাপীরা নিজেদের খারাপ কাজের ফল দেখে অনুতপ্ত হয়। যাঁর কর্মশুদ্ধি থাকে তিনিই পরম আনন্দ লাভ করেন। ইহ-পরলোকে সুখপ্রাপ্ত হন। বহু ধর্মগ্রন্থ পাঠে কোন মূল্য নেই যদি সে পালন না করে। যিনি অল্পমাত্র ধর্মগ্রন্থ চর্চা করেও, ধর্মের অনুকূল জীবন ধারণ করেন তিন বিমুক্তি লাভ করতে পারেন। তাঁর সকল দুঃখের অবসান হয়।
আরও দেখুনঃ