সকামি থের

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ” সকামি থের “। যা “থেরপাথা” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত।

সকামি থের

 

সকামি থের

 

 সকামি খের

১। দিপাদকোষং অসুচি দুগন্ধো পরিহীরতি, 

নানাকুণनृপরিপূরো বিসৃসবস্তো ততো ততো।

২। মিগং নিলীনং কূটেন বলিসেনের অম্বুজ, 

বানরং বিষ লেপেন বাধয়ন্তি পুখুজনং।

৩। রূপা সন্দা রসা গন্ধা ফোটা চ মনোরমা, 

পঞ্চকামগুণা এতে ইথি রূপসিং দিসরে।

8। যে এতা উপসেবস্তি রত্তচিত্তা পুথুজ্ঞনা, 

বড়ঢেস্তি কতসিং ঘোরাং আচিণন্তি পুরভবং।

৫। যো চেতা পরিবজ্জেতি সম্পসেসব পদা সিরো, 

সোমং বেসত্তিকং লোকে সতো সমভিত্ততি।

৬। কামেষাদীনবং দিয়া নেম্মং দটঠুখেমতো, 

নিসটো সকামেহি পত্তো মে আসবখযো’তি।

শব্দার্থ

দিপাদকোষং মানব দেহ; দুগ্‌গন্ধো – – দুর্গন্ধ; পরিহীরতি ঢেকে রাখে; নানাকুণপূপপরি পূরো নানাঘৃণিত বিষয়ে পরিপূর্ণ; বিসবস্তো – নির্গত হয়; নিলীনং – আবৃত; অম্বুজং – মাছ; বলিসেনে – বড়শী দ্বারা; লেপেন আচ্ছাদন দ্বারা; বাধযপ্তি – আবদ্ধ করে; পুথুজনং পৃথকজন, সাধারণ লোক; – – ফোট্ঠা – স্পৰ্শ; ইথি – ত্রী; দিসরে দেখা যায়, উপসেবন্তি – সেবা করে; বড়ঢেন্তি – বৃদ্ধি করে; – – – কটসিং – নরক, দুঃখপূর্ণ স্থান; আচিণন্তি সঞ্চয় করে; পুনর্ভবং – পুনর্ভব, ভবতৃষ্ণা; পরিবজ্জেতি – ত্যাগ করে; সপ্পসেব – সর্প শিরের মত; চেতা কামেষাদীনবং – কামের দোষসমূহ: দঠু – দেখে। – তৃষ্ণাযুক্ত লোক; সমতিবস্তুতি – অতিক্রম করে

 

সকামি থের

 

সারাংশ

মানব দেহ অশুচি ও দুর্গন্ধময়। তাই পুষ্প প্রভৃতির সুগন্ধি দ্বারা ঢেকে রাখতে হয়। কেশ, লোম প্রভৃতি কোন অংশই পবিত্র নয়। দেহ থেকে থুথু-বিষ্ঠা মূত্রাদি নির্গত হয়। লোমকূপ দিয়ে ঘাম বের হয়। এ সমস্ত কারণেই মানুষ দুর্গন্ধ ঢেকে রাখার জন্য সুগন্ধির প্রলেপ দেয় ।

ঘেরার মধ্যে মৃগকে আবদ্ধ করা হয়। বড়শী দ্বারা মৎসকে এবং শৃঙ্খল দ্বারা বানরকে আটকে রাখা হয়। তেমনি অন্য মূর্খজনও পঞ্চ কামগুণে আবদ্ধ থাকে। তারা আসক্তচিত্তে স্ত্রীলোকের রূপ, শব্দ, গন্ধ, রস, স্পর্শে মোহিত হয়ে তা সেবন করে। ফলে তাদের ভবতৃষ্ণা বৃদ্ধি পায়।

সর্বকামি স্থবির কামের এ দোষগুলো প্রত্যক্ষ করে প্রব্রজিত হন। তিনি সেগুলো যথাযথ উপলব্ধি করে জাগতিক ধর্মসমূহ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হয়েছেন। তাঁর সমস্ত আসব ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে।

 

সকামি থের

 

সকামি স্থবির

তিনি বিভিন্ন জন্মে পুণ্য সঞ্চয় করে দোষ-মীমাংসার জ্যেষ্ঠত্ব অর্জন করেন। শেষজন্মে গৌতম বুদ্ধের সময় বৈশালীতে ক্ষত্রিয়কুলে জন্মগ্রহণ করেন। পরিণত বয়সে জ্ঞাতিগণের অনুরোধে বিয়ে করেন। কিছুদিন পর সংসার ত্যাগ করে আনন্দ স্থবিরের নিকট প্রব্রজিত হয়ে শ্রামণ্যধর্ম পালন করতে থাকেন।

তিনি একদিন তাঁর গুরুর সাথে বৈশালীতে জ্ঞাতিগৃহে উপস্থিত হন। তখন তাঁর সত্রী স্বামীর অবর্তমানে অত্যন্ত কৃশ ও দুর্বল হয়েছিল। সে একখানি মলিন বস্ত্র পরিধান করে স্থবিরকে বন্দনা শেষে কাঁদতে লাগল। তা দেখে স্থবিরের করুণা উৎপন্ন হল। অসংযত চিন্তার দরুণ তাঁর ভাবাবেগ দেখা দিল। অশ্বের কশাঘাতের মত তাঁকে বিদ্ধ করল। শেষে শ্মশানে গিয়ে অশুভ ভাবনায় নিবিষ্ট হয়ে অইতফল লাভ করেন।

পরে তাঁর শ্বশুর কন্যাকে নিয়ে স্থবিরের চীবর ত্যাগ করাবার জন্য বিহারে উপস্থিত হন। স্থবির শ্বশুরের অভিপ্রায় জ্ঞাত হয়ে কামভোগের প্রতি বিতৃষ্ণাভাব জাগ্রত করে গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। গাথা শ্রবণে শ্বশুর কামসেবায় তাঁকে প্রলুব্ধ করা যাবে না দেখে চলে গেলেন। স্থবির ১২০ বছর পরমায়ু লাভ করেছিলেন।

আরও দেখুনঃ

 

Leave a Comment