Site icon Language Gurukul [ ভাষা গুরুকুল ] GOLN

আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের সনাতন পদ্ধতি: বক্তৃতা

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের সনাতন পদ্ধতি: বক্তৃতা – যা আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের পাঠদান পদ্ধতি ও কলাকৌশল এর অন্তর্ভুক্ত।

আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের সনাতন পদ্ধতি: বক্তৃতা

 

 

কোনো কার্যক্রমের সফলতা ও ব্যর্থতা নির্ভর করে সঠিক পদ্ধতি প্রয়োগের উপর। অন্যান্য কাজের ন্যায় শিখন- শেখানোর কাজেও প্রাচীন কাল থেকেই নানা রকম পদ্ধতির ব্যবহার হয়ে আসছে। সুতরাং পদ্ধতি পূর্বেও ছিল এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা শিখন-শেখানো কার্যক্রমের পদ্ধতি ও কৌশলকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। এর একটি হলো সনাতন বা গতানুগতিক পদ্ধতি এবং অপরটি হলো আধুনিক বা অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি।

সনাতন পদ্ধতি

প্রাচীনকালে গুরু শিষ্যভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিষ্য গুরুর গৃহে একটি নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত অবস্থান করত। গুরু শিষ্যের সকল ধরণের শিক্ষার ভার গ্রহণ করতেন। এ সময় গুরু মুখোমুখি পদ্ধতিতে শিষ্যকে সকল প্রকার শিক্ষা দিতেন এবং শিষ্য শ্রদ্ধাবনত চিত্তে তা গ্রহণ করত। পরবর্তীতে যখন প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যালয় ভিত্তিক এক হতে বহু শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয় তখন শিক্ষক সকল শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন। ক্রমান্বয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক একটি শ্রেণিতে নির্দিষ্ট সময় ধরে একটি বিষয় বক্তৃতার মাধ্যমে পড়াতে শুরু করেন।

শিক্ষককে কেন্দ্র করে-এ পদ্ধতির সকল কর্মকাণ্ড আবর্তিত হয়। শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ না দিয়ে কেবল শিক্ষক সক্রিয় থেকে পাঠের সকল বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন। পূর্ব থেকে চলে আসা নিয়ম-কানুন মেনে গতানুগতিক ধারায় শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের এ পদ্ধতিকেই বলা হয় সনাতন পদ্ধতি ।

বক্তৃতা পদ্ধতি

সনাতন বা শিক্ষককেন্দ্রিক পাঠদান পদ্ধতির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হলো বক্তৃতা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে শিক্ষক একাই বক্তৃতা দিবেন আর শিক্ষার্থীরা চুপচাপ শুনে যাবে এবং প্রয়োজনীয় নোট নিবে। শিক্ষক কখনো কিছু জিজ্ঞাসা করলে শিক্ষার্থী শুধু উত্তর দিবে বা কথা বলবে।

বলা হয়ে থাকে মধ্য যুগে ইউরোপে উচ্চ শিক্ষার বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় থেকেই এ পদ্ধতি অনুসৃত হতো; সেখানে গ্রীক পণ্ডিতদের মতবাদ উপস্থাপনের জন্য পাণ্ডুলিপির বিষয়বস্তু বক্তৃতার মাধ্যমে উপস্থাপিত হতো। ১৮শ শতাব্দীতে যুক্তিবাদের সমর্থনে এ পদ্ধতি আরও দৃঢ় হয়। জার্মান উচ্চ বিদ্যাপীঠে প্রথম এ পদ্ধতি বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রবর্তিত হয়।

আমাদের দেশে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত এ পদ্ধতিতে পাঠদান চলছে। অন্যান্য বিষয়ের মত আরবি ভাষা ও সাহিত্য পাঠদানেও এ পদ্ধতি প্রাচীনকাল থকে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে উচ্চ শ্রেণিতে এ পদ্ধতি কার্যকরী হলেও নিম্ন শ্রেণিতে তা ফলপ্রসূ হয় না। তাই বলা যায় এ পদ্ধতি সর্বাধিক ব্যবহৃত এবং সহজ হলেও এর কিছু অসুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তথাপি আমাদের দেশে আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণের জন্য পর্যাপ্ত পাঠ সহায়ক উপকরণ, যন্ত্রপাতি ও সমর্থন (Logistic Support ) সবসময় প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়া যায় না বলে বক্তৃতা পদ্ধতির উপরই বেশি নির্ভর করতে হয়।

 

 

বক্তৃতা পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য

বক্তৃতা পদ্ধতির সুবিধাসমূহ

বক্তৃতা পদ্ধতির অসুবিধাসমূহ

আপাতদৃষ্টিতে বক্তৃতা পদ্ধতির কতিপয় সুবিধা থাকলেও কার্যকর শিখন-শেখানোর ক্ষেত্রে এ পদ্ধতির অসুবিধাগুলোই প্রকট হয়ে দেখা দেয়। এ পদ্ধতির অসুবিধাগুলো নিম্নরূপে চিহ্নিত করা যায়।

কিছু দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও আরবি ভাষা ও সাহিত্য পাঠদানে সকল স্তরে বক্তৃতা পদ্ধতির ব্যবহার অব্যাহত আছে। তাই এ পদ্ধতি প্রয়োগের সময় এর সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠার প্রতি শিক্ষককে সচেতন হতে হবে। তাছাড়া আধুনিক কার্যকর পদ্ধতি প্রয়োগ করার প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে।

বক্তৃতা পদ্ধতি কার্যকর করার উপায়

 

 

মূল্যায়ন

১. বক্তৃতা পদ্ধতির সুবিধাগুলো লিখুন।
২. আরবি ভাষার দক্ষতা ও কাওয়াইদ শিক্ষাদানে বক্তৃতা পদ্ধতি যথেষ্ট কার্যকর নয়— আপনি কী এ বক্তব্যের সাথে একমত? আপনার বক্তব্যের সপক্ষে যুক্তি দিন।
৩. বক্তৃতা পদ্ধতি কার্যকর করার উপায়গুলো বর্ণনা করুন ।

আরও দেখুনঃ

 

Exit mobile version