Site icon Language Gurukul [ ভাষা গুরুকুল ] GOLN

হাচিনসের মডেল

আজকে আমাদের আলোচনার  বিষয়-হাচিনসের মডেল

হাচিনসের মডেল

ডব্লিউ, জে. হাচিন্‌স (১৯৭১) সন্তাননী বাগর্থবিদ্যার একটি ভিন্নতর মডেল নির্মান করেন । তিনি শব্দের অর্থকে বলেন অর্থমুল এবং অর্থমূল যে সব মৌল অর্থ উপাদানে গঠিত তাদের বলেন অর্থাণু । অর্থাণুসমষ্টি থেকে কিভাবে কথাবাক্য বা লিখিত বাক্য আহরিত হয় হাচিনস তা ব্যাখ্যা করেন।

প্রক্রিয়াটি শুরু হয় জ্ঞানাত্মক অভিজ্ঞতা থেকে। বক্তা বা লেখক বাস্তবে যে জ্ঞানাত্মক অভিজ্ঞতা লাভ করেন তাকে প্রকাশ করার জন্য প্রথমে অর্থাণু বাছাই করে একটি অর্থাৎ জালিকা তৈরী করেন । অর্থাণু জালিকা থেকে তিনি অর্থমূল নির্বাচন করেন ।

নির্বাচিত অর্থমূলের উপর এরপর তিনি প্রয়োগ করেন শাব্দিক সূত্রাবলী যাতে থাকে গ্রন্থি ও বন্ধন । শাব্দিক সূত্রাবলী অর্থশাব্দিক রূপান্তরের মাধ্যমে শাব্দিক উপস্থাপনা অর্জন করে । শাব্দিক উপস্থাপনা এরপর দ্বিমূখী রূপান্তরের সম্মুখীন হয় যোগাযোগের মাধ্যমে অনুসারে ।

কথার ক্ষেত্রে শাব্দিক উপস্থাপনা প্রথমে শাব্দরূপমূলীয় রূপান্তরের মাধ্যমে রূপমূলীয় উপস্থাপনা এবং রূপমূলীয় উপস্থাপনা রূপধ্বনিমূলীয় রূপান্তরের মাধ্যমে ধুনিমুলীয় উপস্থাপনা অর্জন করে এবং ধ্বনিমূলীয় উপস্থাপনা বক্তব্যকর্মের মাধ্যমে কথাবাক্যে রূপ লাভ করে ।

অন্যদিকে লেখার ক্ষেত্রে শাব্দিক উপস্থাপনা শাব্দ লিপিমুলীয় রূপান্তরের মাধ্যমে লিপিমূলক উপস্থাপনা অর্জন করে যা আবার লিখন কর্মের মাধ্যমে লিখিত বাক্যে রূপলাভ করে । পুরো প্রক্রিয়াটিকে হাচিনস নিম্নরূপ চিত্রের মাধ্যমে প্রদর্শন করেন ( Hutchins 1971: 8 )

 

 

হাচিনাসের তত্ত্বের ভিত্তি বাগধিক । এটি দেখায় কিভাবে একটি বাগধিক ভিত্তি থেকে বাক্যতাত্ত্বিক সংগঠন আহরিত হয়। এজন্যই এটি স্থাননী তত্ত্ব। এতে যদিও গভীর ও উপরি সংগঠনের স্পষ্ট উল্লেখ নেই তবু এটা বুঝতে অসুবিধা হয় না যে সঞ্জননী প্রক্রিয়া শুরু হয় গভীর সংগঠন থেকে এবং শেষ হয় উপরি সংগঠনে এসে।

হাচিন্স কয়েক ধরনের সঙ্গতিবিধির কথা বলেন যেগুলো ক্রিয়াশীল হয় রূপান্তরের বিভিন্ন স্তরে

প্রক্রিয়াটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আর্থশাব্দিক রূপান্তর অর্থাৎ অর্থমূলীয় সূত্রাবলী কিভাবে শাব্দিক উপস্থাপনা লাভ করে তার বর্ণনা । আর্থশাব্দিক রূপান্তরের দুটি অংশ রেখাবদ্ধকরণ এবং আর্থশাব্দিক – নিয়মের প্রয়োগ । এগুলো কিভাবে কাজ করে উদাহরণ দিয়ে দেখা যাক। নীচের চিত্রটি একটি শাব্দিক সূত্র :

(computer)- gl agt (retrieve) (information)
_sP (mod) ef (ease)

এখানে

agt = কর্তা

gl = কর্ম

sp 4 ef = বিশেষণ চিহ্ন mod = বিশেষণ শ্রেণী

এবার রেখাবন্ধকরণ প্রক্রিয়ায় এখানে বিষয়ক গ্রন্থি ও কেন্দ্রবিন্দু গ্রন্থি প্রদর্শিত হবে । যেমন :

বিষয়বস্তু

– (retrieve ) & ( information) agt (computer) – ef SP (mod) (ease)

এবার বাক্যের প্রকার ও শাখাবিভক্তির স্থান নির্ধারণ করতে হবে। আমরা ধরে নিতে পারি বাক্যটি হবে বিবৃতিমূলক (decl) এবং শাখা বিভাক্ত (b) হবে retrieve থেকে। ফলে আমরা পাবো :

agt decl- → [ (computer) ] > (retrieve ) g[(information)] b (retrieve) ef SP (mod) (ease) sp.

এভাবে রেখাবদ্ধকরণ শেষ হলে দ্বিতীয় পর্যায়ে এর উপর আর্যশাব্দিক নিয়ম প্রযোজ্য হবে। হাচিনস ৩৯১ টি আখশাব্দিক নিয়ম লিপিবদ্ধ করেন। আমরা সেসবের বিস্তারিত বর্ণনায় যাবো না।

শুধু এটুকু বলবো যে হাচিনসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী আলোচ্য ক্ষেত্রে মোটামুটি এগারটি আর্থশাব্দিক নিয়ম প্রযোজ্য হয় এবং তার ফলে শাব্দিক উপস্থাপনা হিসাবে নিম্নলিখিত ক্যাটিগরি ও শব্দ পাওয়া যায় :

NP (N(computer))

V (retrieve))

NP (N(information))

V(A) Adv (ease ) )

এগুলোকে বৃক্ষচিত্রে প্রদর্শন করলে এরকম দেখাবে :

 

 

এই শাব্দিক উপস্থাপনা এরপর পর্যায়ক্রমে শাব্দলিপিমূলক রূপান্তর ও লিখনপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিম্নলিখিত বাক্য এবং অন্যদিকে শাসরূপমূলীয় রূপান্তর, রূপধুনিমূলক রূপান্তর ও বক্তব্যকর্মের মাধ্যমে নিম্নলিখিত বাক্যের উচ্চারণে রূপলাভ করে :

Computer retrieves information easily. /kam’pju:ta rr’tri:vz Info’mer fan ‘i:zılı/

 

 

হাচিন্‌সের তত্ত্বের যন্ত্রপ্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল । তবে এটি রূপান্তরমূলক ব্যকরণের যে কোন তত্ত্বের চেয়ে ব্যাপক । এটি একাধারে কথ্য ও লিখিত যোগযোগের ব্যাখ্যা প্রদান করে। ফলে প্রায়োগিক ভাষাবিজ্ঞানীদের কাছে নিংসদেহে এর মূল্য অধিক হবে ।

আরও দেখুন:

 

Exit mobile version