উরুবেল কসপো থের

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ” উরুবেল কসপো থের “। যা “থেরপাথা” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত।

উরুবেল কসপো থের

 

উরুবেল কসপো থের

উরুবেল কস্সপো থের

১।দিস্তান পটিহীরানি গোতমস যসসিনো,.

ন তাবাহং পণিপতিং ইসসা মানেন বঞ্চিতো।

২।মম সঙ্কল্পমঞঞায় চোদেসি নরসারথি,

ততো মে আসি সংবেগো অদ্ভুতো লোমহংসনো।

৩। পুব্বে জটিলভূতস যা মে ইদ্ধি পরিত্তিকা, 

তাহং তদা নিরঙ্কত্বা পজিং জিন-সাসনে।

8।পুরে যজ্ঞনে সন্তুঠো কামধাতু পুরখতো, 

পচ্ছা রাগঞ্চ দোসঞ্চ মোহঞ্চাপি সমূহনিং।

৫ ৷পুিেনবাসং জানামি, দিচকখুং বিসোধিতং,

ইদ্ধিমা পরচিত্ত দিসোতঞ্চ পাপুলিং ।

৬। যস চাথায় পজিতো অগারসমা অনগারিং, 

সো মে অথো অনুস্পত্তো সব্বসংযোজনক্খযো’তি।

 

 

শব্দার্থ

দিয়ান দেখে; পটিহীরানি প্রতিহার্য; তাবাহ তখনও আমি; পণিপতিং প্রণাম ইস্সাচ মানেন – – – – ঈর্ষা ও অভিমান বশত; সঙ্কমস্পঞঞা আমার সংকল্প জেনে; চোদেসি – নিগ্রহ করলেন, শাসন করলেন; – অবভুতো অদ্ভুত; আসি – উৎপন্ন হল; লোমহংসনো লোমহর্ষ, জটিলভূতসস – জটিল সম্প্রদায়ের সময়ে; ইদ্ধি – ঋদ্ধি; পরিত্তিকা – যৎসামান্য; নিরতা ত্যাগ করে;

পাজিং প্রব্রজ্যা গ্রহণ করি; – – যজ্ঞজ্ঞেন – যজ্ঞদ্বারা, কামধাতু – স্বর্গসুখ; পুরখতো – ভোগ করব বলে; পচ্ছা – পরে; সমূহনিং – ধ্বংস – – করে; পুব্বেনিবাস পূর্বজন্মবৃত্তান্ত; জানামি – অবগত হই; দিচং – দিব্যচক্ষু; বিসোধিত বিশুদ্ধ – – করে; পরচিত্তজ্ঞানং পরচিত্তজ্ঞান; পাপুশিং প্রাপ্ত হয়েছি; যস চ’খায় অহং- যে কারণে আমি; আগার মা- আগার (গৃহ) থেকে, গৃহীজীবন থেকে; অনুপ্পত্তো উৎপন্ন হয়নি; সসংযোজনথযোতি – যাবতীয় – সংযোজন বা বন্ধন ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে।

সারাংশ

উরুবেলা কাশ্যপ স্থবির পূর্বে জটিল সন্ন্যাসীভুক্ত ছিলেন। তিনি বুদ্ধের প্রতিহার্য ঋদ্ধি দর্শন করেও তাঁকে প্রণাম করেন নি। তথাগত বুদ্ধ তাঁর মিথ্যা সংকল্প জেনে ‘তুমি অর্থৎ হও নি এ বলে তিরস্কার করেছিলেন। উরুবেলা কাশ্যপের সঙ্গে সঙ্গে সংবেগ ও লোমহর্ষ উৎপন্ন হল। জটিল সন্ন্যাসী অবস্থায় তার সামান্য যে ঋদ্ধি ছিল তাও বুদ্ধের উপদেশে বিনষ্ট হল।

তিনি ভেবেছিলেন- যাগযজ্ঞের দ্বারা স্বর্গসুখে সন্তুষ্ট থাকবেন। বুদ্ধশাসনে প্রব্রজ্যা গ্রহণের পর তাঁর সে চিন্তা দূরীভূত হল। তাঁর দিব্যচক্ষু উৎপন্ন হল। তিনি ষঢ়াভিজ্ঞ, পরচিত্ত জ্ঞান ও দিব্যশ্রোত্র জ্ঞান লাভ করলেন। যে উদ্দেশ্যে আগার থেকে অনাগারিকে প্রব্রজিত হয়েছেন তা সার্থক হয়েছে। তিনি পরামার্থ লাভ করে সকল বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করেছেন।

উরুবেলা কাশ্যপ

তিনি পদুমুত্তর বুদ্ধের সময় কুলগৃহে জন্মগ্রহণ করেন। সে সময় শাস্তা এক ভিক্ষুকে মহাপরিষদলাভীর শ্রেষ্ঠস্থানে নিয়োগ করেছিলেন। তিনিও সে পদ লাভের জন্য মহাদান দেন। পদুমুত্তর বুদ্ধ তাঁকে সে বর প্রদান করেন এবং গৌতম বুদ্ধের সময় তাঁর প্রার্থনা পূর্ণ হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন।

তারপর অনেক জন্ম পরিগ্রহ করে গৌতম বুদ্ধের উৎপত্তির অল্পকাল পূর্বে বারাণসীতে ব্রাহ্মণকুলে জন্ম নেন। তাঁরা তিন সহোদর ছিলেন। কাশ্যপ গোত্রে জন্ম বলে তাঁরা কাশ্যপ নামে পরিচিত ছিলেন। বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তাঁরা ত্রিবেদ শিক্ষা করেন।

বড় ভাইয়ের পাঁচশত, মধ্যম ভাইয়ের তিনশত এবং ছোট ভ্রাতার দু’শত করে শিষ্য ছিল। অগ্রজ নিজের শিষ্য নিয়ে উরুবেলায় গমন করে ঋষিপ্রব্রজ্যা গ্রহণ করেন। তখন থেকে তিনি উরুবেলা কাশ্যপ নামে পরিচিত হন। মধ্যম কাশ্যপ গঙ্গা নদীর বাঁকে ছিলেন বলে তাঁর নাম হয় নদী কাশ্যপ। কনিষ্ঠ ভ্রাতা গয়াশীর্ষে অবস্থান করতেন। তাই তাঁকে গয়াকাশ্যপ বলা হত।

 

উরুবেল কসপো থের

 

বুদ্ধ সারনাথে পঞ্চবর্গীয় শিষ্য ও যশ স্থবির প্রমুখ পঞ্চান্ন জন ভিক্ষুকে ধর্মপ্রচারের জন্য আদেশ দেন। তারপর ভগবানবুদ্ধ ভদ্রবর্গীয় কুমারদেরকে প্রব্রজ্যা প্রদান করে উরুবেলা কাশ্যপের বাসস্থানে উপনীত হন। সেখানে তিনি তাঁর অগ্নিশালায় কিছুদিন বাস করেন। সে সময় বুদ্ধ বিবিধ প্রকার ঋদ্ধি প্রদর্শন করেন। শিষ্যসহ উরুবেলা কাশ্যপকে উপসম্পদা প্রদান করেন।

তাঁর দীক্ষাগ্রহণের কথা শুনে অপর দু’ভাইও সপরিষদ বুদ্ধের নিকট উপসম্পদা লাভ করেন। তখন ভগবান কাশ্যপপুত্রসহ এক হাজার ভিক্ষুকে উপলক্ষ করে গয়াশীর্ষের সুবিস্তৃত পাষাণপৃষ্ঠে ‘আদিত্ত পরিহায় সুক্ত’ দেশনা করলে সকলেই অহতফলে প্রতিষ্ঠিত হন। উরুবেলা কাশ্যপ অর্থত্বফল প্রাপ্ত হয়ে মনের আনন্দে গাথাগুলো ভাষণ দিয়েছিলেন।

আরও দেখুনঃ

 

Leave a Comment