আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-বিপরীতার্থক রূপমূল
বিপরীতার্থক রূপমূল
বিপরীতার্থক রূপমূল সমার্থক রূপমূলের বিপরীতধর্মী অর্থ নির্দেশ করে। বিপরীতার্থক রূপমূলে একটা রূপমূলের সঙ্গে অন্য একটা রূপমূলের অর্ধগত বৈসাদৃশ্য নির্দেশ করে। যখন কোন একটা রূপমূল
ব্যবহৃত হয়, তখন তা বক্তা ও শ্রোতার কাছে তার একটা বিপরীত গঠন উপস্থাপিত হয়ে থাকে। রূপমূলের অর্থগত এই বৈপরীত্যই বিপরীতার্থক দিক হিসেবে চিহ্নিত। যেমন-শাদা কালা, মাইয়া-পোলা ইত্যাদি। ডেমরা অঞ্চলের প্রচলিত ভাষায় কথোপকথনের সময় যেসব বিপরীতার্থক -রূপমূল ব্যবহৃত হয় তার গঠন প্রণালী নিচে দেয়া হল:
বিপরীতার্থক রূপমূল নানাভাবে গঠিত হয়।
ক. ভিন্ন রূপমূল প্রয়োগ করে, যেমন-
হোমকে (সামনে) পাছে (পিছনে) এখানে বিপরীত অর্থসূচক রূপমূল দুটোর মূলধ্বনি পৃথক।
খ. গঠনগত সাদৃশ্য রয়েছে এমন রূপমূলের পূর্বে ‘বে’, ‘আ’ উপসর্গ যোগ হয়ে বিপরীত অর্থে পরিবর্তিত হয়।
ডক (সুন্দর) বেডক (কুৎসিত), আকাম (কুকর্ম) কাম (কাজ)।
গ. রূপমূলের শেষে ‘না’ রূপমূল যোগ করে বিপরীত অর্থে পরিবর্তিত করে হড্যাক (জাগা) গুমাইননা (ঘুমান )
৩২. ডেমরা অঞ্চলে প্রচলিত বিপরীতার্থক -রূপমূলের তালিকা (সংক্ষিপ্ত) দেয়া হল :
মূল রূপমূল
আউলা-জাউলা (এলোমেলো )
ইটটু (অল্প)
উছা (উঁচু)
হজাক (জাপা)
বিহান (সকাল)
হোমান (সোজা /সমান )
হাছা (সত্য)
গোফাট ( দূরে )
নয়া (নতুন)
বিপরীতার্থক -রূপমূল
গুছাইন্যা (গুছানো)
বেশি
নিছা (নিচু
মাইনা (ঘুমান )
হাইনজা/ হানজা (সন্ধ্যা)
বেস্তকা (অসমান)
মিছা (মিথ্যা)
হুমকে (কাছে)
আগিলা (পুরান)
বাক্যে প্রয়োগ
আউলা জাউলার চাইয়া গুছাইন্যা মাইয়া বালা(এলোমেলোর চেয়ে গুছানো মেয়ে ভাল) বেশি না ইটু দেকমু
(বেশি না অল্প দেখবো)
উছা নিছা পতে দেইখ্যা হাড
(উঁচু নিচু পথ দেখে হাট)
শুমাইননা মানুরে হজাক করিছ না।
(ঘুমান মানুষকে সজাগ করিস না )
হাইনজার সম কান্দন বালা না
(সন্ধ্যার সময় কান্না করা ভাল না )
হোমান কইরা ৰাগ কর।
(সমান করে ভাগ কর )
মিছার চাইয়া হাছা কতা, করুন বালা
(মিথ্যার চেয়ে সত্য কথা বলা ভাল )
আমার হুমকেততে গোফাট যা
(আমার কাছ থেকে দূরে যা )
আগিলা বই ধুইয়া নয়া বই ল
আরও দেখুন: