আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি: প্রশ্নোত্তর, আলোচনা ও প্রদর্শন, আরোহী ও অবরোহী, গাঠনিক প্রভৃতি

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি: প্রশ্নোত্তর, আলোচনা ও প্রদর্শন, আরোহী ও অবরোহী, গাঠনিক প্রভৃতি – যা আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের পাঠদান পদ্ধতি ও কলাকৌশল এর অন্তর্ভুক্ত।

আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি: প্রশ্নোত্তর, আলোচনা ও প্রদর্শন, আরোহী ও অবরোহী, গাঠনিক প্রভৃতি

 

আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি: প্রশ্নোত্তর, আলোচনা ও প্রদর্শন, আরোহী ও অবরোহী, গাঠনিক প্রভৃতি
আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণ

 

বর্তমানে সারা বিশ্বে অংশগ্রহণমূলক আধুনিক শিক্ষণ-শিখন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষক শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। যে শিক্ষণ শিখন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় শিখন সামগ্রীর সহায়তায় তাদের যোগ্যতা, মনস্তাত্বিক ধারণ ক্ষমতা,আগ্রহ, প্রবণতা ইত্যাদি অনুয়ায়ী সক্রিয়তা, স্বাধীনতা, সৃজনশীলতা এবং মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পন্ন করে জ্ঞান অর্জন করে তাকে অংশগ্রহণমূলক শিক্ষণ-শিখন পদ্ধতি বলা হয়। এ পদ্ধতিতে শিক্ষক একজন সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করে থাকেন।

অংশগ্রহণমূলক শিক্ষণ পদ্ধতির মধ্যে প্রশ্নোত্তর, আলোচনাও প্রদর্শন, আরোহী ও অবরোহী, গাঠনিক, ভূমিকাভিনয়, মাথা খাটানো, সমস্যা সমাধান, একক কাজ, জোড়ায় কাজ, দলগত কাজ, তালিকা প্রণয়ন, পোস্ট বক্স জিগসো উল্লেখযোগ্য। এ পাঠে আমরা প্রশ্নোত্তর, আলোচনা ও প্রদর্শন এবং আরোহী ও অবরোহী পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো।

প্রশ্নোত্তর পদ্ধতি

পূর্বকাল থেকেই সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল প্রচলিত পদ্ধতি হিসেবে বক্তৃতা পদ্ধতির ব্যবহার বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রচলিত। আধুনিক শিক্ষণ কার্যক্রমে এ পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা ও সমস্যাগুলো দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয় । এরই অনুক্রমে এসেছে প্রশ্নোত্তর পদ্ধতি যা বক্তৃতা পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা থেকে উত্তরণের একটা ধাপ বিশেষ। আধুনিক যুগে পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে প্রশ্নোত্তর পদ্ধতি সফলতার সাথে প্রয়োগ হচ্ছে। শ্রেণি পাঠদানে এ পদ্ধতিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ই উপকৃত হয়। ফলে এটি একটি আধুনিক অংশগ্রহণমূলক উত্তম পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হয়।

শিখন-শেখানো কার্যক্রমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পরস্পরের মধ্যে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে কোনো বিষয়ে ধারণা গঠন, দক্ষতা অর্জন ও আচরণের পরিবর্তন করার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নোত্তর পদ্ধতি বলা হয়। এ পদ্ধতিতে আলোচ্য পাঠকে কেন্দ্র করে কতগুলো ছোট ছোট প্রশ্ন করা হয়, সে সব প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে শিক্ষার্থীরা মূল বিষয়বস্তু অনুধাবনে তৎপর হয়। এ পদ্ধতিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়কেই পাঠে সক্রিয় থাকতে হয়। এটি একটি দ্বিমূখী প্রক্রিয়া। এ পদ্ধতিকে পৃথকভাবে প্রয়োগ করা যায় আবার অন্যান্য পদ্ধতিকে কার্যকর করার জন্যও প্রশ্নোত্তর কৌশল ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্নোত্তর পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য

  • প্রশ্নোত্তর পদ্ধতিতে শিক্ষক শিক্ষার্থী উভয়ই সক্রিয়ভাবে সমান ভূমিকা পালন করে ।
  •  শিক্ষক শিক্ষার্থী উভয়ে আলোচ্য বিষয়কে কেন্দ্র করে পরস্পরকে প্রশ্ন করে থাকে এবং উত্তর প্রদান করে ।
  • ছোট ছোট প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে মূল বিষয়বস্তু অনুধাবন করতে পারে।
  • প্রশ্নকরণের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানের মূল্যায়ন করা যায়।
  • শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীকে একই প্রশ্ন করে তাদের প্রত্যেকের মেধার ভিন্নতা যাচাই করা যায়।
  • কোনো শিক্ষা উপকরণ ছাড়াই এ পদ্ধতিতে শ্রেণিকক্ষে প্রাণের সঞ্চার করা যায়। • শিক্ষার্থীর বুদ্ধিমত্তাকে তীক্ষ্ণ করে তুলে।
  • এটি অন্য পদ্ধতির সহায়ক কৌশল হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে।
  • সকল শিক্ষার্থীকে পাঠে সম্পৃক্ত করা যায়।
  • উপযুক্ত প্রশ্ন নির্বাচনে শিক্ষককে সচেতনভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়।
  • প্রশ্নোত্তর একটি বহুল প্রচলিত কার্যকর পদ্ধতি।

প্রশ্নোত্তর পদ্ধতির সুবিধা

  • শ্রেণিকক্ষে প্রশ্নোত্তর পদ্ধতিতে পাঠদানে কোনো অতিরিক্ত খরচের প্রয়োজন না হওয়ায় আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এ পদ্ধতির প্রয়োগে আর্থিক সমস্যার সৃষ্টি হয় না।
  • এ পদ্ধতির বাস্তবায়নে শিক্ষক শিক্ষার্থীর মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
  • শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সাথে নিঃসংকোচে মনের ভাব বিনিময়ের সুযোগ পায় ।
  • পাঠের জটিল বিষয়গুলো শিক্ষার্থীরা প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষকের নিকট থেকে বুঝে নিতে পারে। শিক্ষকও প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর পারঙ্গমতা সম্পর্কে অবহিত হয়ে সে অনুযায়ী পাঠদান প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হতে পারেন এবং প্রশ্নোত্তরের পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে পাঠের মূল বক্তব্য অনুধাবনে সহায়তা করতে পারেন।
  • প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণে কতটুকু মনোযোগী, শিক্ষক তা জানতে পারেন।
  • প্রশ্নোত্তর পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সক্রিয়তা ও কর্মতৎপরতা জাগিয়ে তোলার মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষে প্রাণের সঞ্চার করে।
  • প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে শ্রেণিতে পাঠদানে একঘেঁয়েমী দূর করে পাঠে বৈচিত্র্য আনা যায়।
  • শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়, চিন্তাশক্তি বাড়ে ও যুক্তি প্রদানে সাহসী হয়। প্রশ্নোত্তর পদ্ধতির মাধ্যমে উত্তম শিক্ষণ পদ্ধতির কতিপয় নীতি যেমন: সহজ থেকে কঠিন, জানা থেকে অজানা, নির্দিষ্ট থেকে অনির্দিষ্ট,
  • বিশেষ থেকে সাধারণ, সমগ্র থেকে অংশ, মূর্ত থেকে বিমূর্ত অত্যন্ত সহজ ও সাবলীলভাবে অনুসরণ অরে শিক্ষার্থীর জ্ঞানার্জনে সহায়তা করা যায়।
  • এ পদ্ধতিতে শ্রেণি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
  • সহজে শিক্ষার্থীদের শিখন অগ্রগতি যাচাই করা যায়।

প্রশ্নোত্তর পদ্ধতির অসুবিধা

প্রশ্নোত্তর পদ্ধতির উপরোল্লিখিত সুবিধাগুলো থাকা সত্ত্বেও এ পদ্ধতি প্রয়োগে কিছু অন্তরায় ও রয়েছে, সেগুলো হলো:

  • প্রশ্নোত্তর পদ্ধতি প্রয়োগে প্রশ্নমালা উপস্থাপনে ধারাবাহিকতা যথার্থভাবে রক্ষিত না হলে এ পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য ব্যহত হতে পারে। কারণ বিষয়বস্তুর এলোমেলো উপস্থাপন শিক্ষার্থীর মনে বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভুল ধারণার সৃষ্টি করতে পারে ।
  • প্রশ্ন তৈরি ও উপস্থাপনে শিক্ষক যথেষ্ট দক্ষ ও কৌশলী না হলে মূল পাঠ্যবিষয় থেকে সরে পড়ার সম্ভাবনা থাকে এবং মূল প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে অবান্তর বিষয়ের অবতারণার কারণে যথাসময়ে মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপন সম্ভব নাও হতে পারে।
  • খুব সহজ প্রশ্ন, অপ্রাসংগিক প্রশ্ন, কিংবা গুরুত্বহীন বিষয়ে প্রশ্নের ফলে শিক্ষার্থীরা পাঠে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
  • অধিক প্রশ্ন করার ফলে অপ্রস্তুত শিক্ষার্থীরা বিরক্ত হতে পারে।
  • প্রশ্ন সংগঠনে দুর্বলতা বা বিক্ষিপ্ত প্রশ্ন করার কারণে শ্রেণি নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত হতে পারে।
  • অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী সম্বলিত শ্রেণিতে প্রশ্নোত্তর পদ্ধতির সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না ।

আপনি কীভাবে শ্রেণিতে প্রশ্নোত্তর পদ্ধতিকে অধিক কার্যকর করতে পারেন?

আলোচনা পদ্ধতি

আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষাদানে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিগুলোর মধ্যে আলোচনা পদ্ধতি অন্যতম। শিক্ষক শিক্ষার্থী উভয়ের সক্রিয় অংশগ্রহণে এ পদ্ধতি সফলভাবে প্রয়োগ করা গেলে পাঠটি উপভোগ্য হতে পারে। এ পদ্ধতিতে সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা আলোচনা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। সাধারণ অর্থে কোনো একটি সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে কয়েকজনের মিলিত চিন্তা ও পারস্পরিক কথোপকথনকেই বলা হয় আলোচনা।

যে পদ্ধতি অনুসরণ করে পাঠ্য বিষয়বস্তুর মূলবক্তব্য শিক্ষার্থীরা নিজেরা একে অপরের সাথে আলোচনা করে আয়ত্ত্ব করতে পারে এবং তা আয়ত্ত্ব করতে সমস্যার সম্মুখীন হলে শিক্ষকের পরামর্শ, নির্দেশনা গ্রহণ করে ও তাঁর সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সঠিক সমাধান বের করতে পারে তাকে আলোচনা পদ্ধতি বলে।

এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে মতামত দেয় এবং আলোচনার মাধ্যমে কঠিন বিষয়কে সহজে আয়ত্ত্ব করতে পারে। আলোচনার প্রক্রিয়াটি চলে শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ও দলনেতার পরিচালনায়। এ পদ্ধতিতে শিক্ষক শক্ষার্থী উভয়ই সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকে। শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ নিজেদের চেষ্টায় শিখতে পারে বলে স্বশিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পায় এবং শিখন স্থায়ী হয়।

 

 

আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি: প্রশ্নোত্তর, আলোচনা ও প্রদর্শন, আরোহী ও অবরোহী, গাঠনিক প্রভৃতি

 

এখন আলোচনা পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলো নিজে বের করুন।

আলোচনা পদ্ধতির সুবিধা

আলোচনা পদ্ধতির সুবিধাগুলো নিম্নরূপ:

  • শ্রেণির সকল শিক্ষার্থী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। ফলে শিক্ষণ শিখন কার্যক্রম অধিক কার্যকর হয়।
  • নিজেরাই আলোচনা ও মত বিনিময় করে সমস্যা সমাধান করতে পারে বলে নিজেদের প্রচেষ্টার মাধ্যমেই শিখন সম্পন্ন হয় ও শিখন স্থায়ী হয়।
  • আলোচনার মাধ্যমে বিষয়বস্তু আয়ত্ত্ব করে বলে মুখস্থ নির্ভরতা কমে যায়।
  • শিক্ষার্থীরা চিন্তাশীল ও যুক্তিবাদী হয়।
  • শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকশিত হয়।
  •  শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধুত্বসুলভ পরিবেশ তৈরি হয় এবং বিভিন্ন প্রকার সামাজিক গুণাবলি বিকশিত হয়।
  • স্বাধীন ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠে, আত্মনির্ভরতা সৃষ্টি হয় ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে উঠে। সকলের যুক্তির ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান হয় বলে শিক্ষার্থীরা অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় এবং সহমর্মী হয় ।
  • নেতৃত্বের যোগ্যতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা অর্জিত হয়।
  • নিষ্ক্রীয় ও অন্তর্মুখী শিক্ষার্থীদের সংকোচ দূর হয় এবং জড়তাগ্রন্থ শিক্ষার্থীদের জড়তা দূর হয়।
  • শিক্ষার্থীদের মধ্য সহযোগিতা, সহমর্মিতা, সহনশীলতা, নিয়মানুবর্তিতা, আনুগত্য ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসহ নানাবিধ মানবিক গুণাবলির বিকাশ লাভ করে ।

আলোচনা পদ্ধতির অসুবিধা

  • বর্তমানে আমাদের দেশে মাদরাসায় দৈনন্দিন শ্রেণি পাঠদানের জন্য নির্ধারিত ৩০-৪৫ মিনিট সময়ের মধ্যে আলোচনা পদ্ধতি প্রয়োগ সম্ভব নয় ।
  • আলিম ফাজিল ও কামিল স্তরে এ পদ্ধতি উপযোগী হলেও দাখিল স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য এ পদ্ধতি সুবিধাজনক নয় ।
  • এ পদ্ধতি উচ্চ মেধার শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য হলেও মধ্যম ও নিম্ন মেধার শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী। নয়।
  • অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যে এ পদ্ধতিতে ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে।
  • দক্ষ প্রশিক্ষিত শিক্ষক ব্যতীত এ পদ্ধতির সুফল পাওয়া যায় না।
  • সঠিক পরিকল্পনা না থাকলে পাঠ্যসূচী সমাপ্ত করার অগ্রগতি হ্রাস পেতে পারে ।
  • অধিক শিক্ষার্থী সম্বলিত শ্রেণিকক্ষে এ পদ্ধতির প্রয়োগে শ্রেণি-শৃংখলা বিঘ্নিত হতে পারে।

প্রদর্শন পদ্ধতি

শ্রেণি পাঠদানে কোনো বাস্তব ঘটনা বা বিষয় প্রত্যক্ষভাবে উপস্থাপনের প্রক্রিয়াকে প্রদর্শন পদ্ধতি বলে। আরবি শিক্ষাদানে প্রদর্শন পদ্ধতিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ পদ্ধতিতে পাঠ উপস্থাপনের মূল উদ্দেশ্য হলো পাঠের বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদেরকে বাস্তবে দেখানো। বক্তৃতা পদ্ধতির পরিপূরক হিসেবে এ পদ্ধতির ব্যবহারে শ্রেণি পাঠদান বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠে।

প্রদর্শন পদ্ধতিতে শিক্ষক উপস্থাপকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপোকরণের সাহায্যে এবং মৌখিক বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের হৃদয়ঙ্গম করাতে সচেষ্ট হন এবং বিষয়বস্তুটি শিক্ষার্থীরা বাস্তবে কীভাবে প্রয়োগ করবে তা হাতে কলমে ধারাবাহিকভাবে দেখিয়ে দেন।

প্রদর্শন পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যাবলি

  • প্রদর্শন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় উপকরণ বা যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে পাঠ্য বিষয়কে হাতে কলমে করে দেখানো এবং বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অংশসমূহ শিক্ষার্থীদের সামনে ব্যাখ্যা করা হয়।
  • এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা শ্রোতা ও দর্শক হিসেবে শ্রেণিতে উপস্থিত থেকে পাঠ্য বিষয় অনুধাবন করতে অপেক্ষাকৃত বেশি তৎপর হয়, আর শিক্ষক উপস্থাপকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের হৃদয়ঙ্গম করাতে তৎপর থাকেন।
  • শিক্ষার্থীরা বিষয়বস্তু সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান আহরণ করতে পারে।
  • শিক্ষার্থীদের বক্তৃতা শোনার সাথে সাথে প্রদর্শিত বিষয়ের দিকেও মনোযোগ তাত্ত্বিক বিষয়কে ব্যবহারিক পরীক্ষার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।

 

আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণের অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি: প্রশ্নোত্তর, আলোচনা ও প্রদর্শন, আরোহী ও অবরোহী, গাঠনিক প্রভৃতি
আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষণ

 

প্রদর্শন পদ্ধতির সুবিধা

  • শিক্ষক কেন্দ্রিক পদ্ধতি হওয়া সত্ত্বেও প্রদর্শন পদ্ধতি নিম্নবর্ণিত সুবিধাদির জন্য শিক্ষণের ক্ষেত্রে সমাদৃত ।
  • প্রদর্শন পদ্ধতি একটি সক্রিয় পদ্ধতি হিসেবে পরিগণিত, যদিও এতে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকই অধিক সক্রিয় থাকেন।
  • এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক উপায়ে শিখতে পারে এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারে। কারণ এ পদ্ধতিতে মৌখিক বিবৃতির পাশাপাশি উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে আলোচ্য বিষয়কে শিক্ষার্থীদের সামনে জীবন্ত করে তুলে ধরা হয়।
  •  শিক্ষার্থীদের নিকট বিষয়বস্তু সহজ হয় এবং শিখন তরান্বিত হয়। শিক্ষার্থীদের পাঠের প্রতি আগ্রহ ও কৌতহল বদ্ধি পায়। দিতে হয়।

আরও দেখুনঃ

 

Leave a Comment