আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় পঠন দক্ষতা – যা আরবি ভাষার দক্ষতা শিক্ষাদান পদ্ধতি এর অন্তর্ভুক্ত।
পঠন দক্ষতা
ভূমিকা
ভাষার তৃতীয় অন্যতম দক্ষতা হলো- পঠন বা পড়ার দক্ষতা ‘পড়ার দক্ষতা’ জ্ঞানার্জনের অন্যতম মাধ্যম। অন্যান্য যেসব মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করা হয়, তার মধ্যে পঠন বা পড়ার মাধ্যমটি খুবই সহজসাধ্য। পঠন দক্ষতা অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা লাগে না। যে কোনোখানে বই পুস্তুক, পেপার পত্রিকা ইত্যাদি পড়ে পঠন দক্ষতা অর্জন করা যায়। আরবি ভাষা শিক্ষা ও শিক্ষণের জন্য আরবি পঠন বা পড়া একটি জরুরি মৌলিক বিষয় এটা সকলের কাছেই স্পষ্ট।
গুরুত্ব
পঠন বা পড়ার প্রাথমিক সূচনা হয় প্রধানত পূর্ববর্তী শোনা ও বলা দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে। শুদ্ধ উচ্চারণ শুনে অভ্যস্ত হয়ে শিক্ষার্থী শুদ্ধ উচ্চারণে পড়তে অভ্যস্ত হয়। আর পাঠের ফলে শিক্ষার্থীর জ্ঞানের দ্বার উন্মোচিত হয়। শিক্ষার্থীদের চিন্তা-চেতনা ও ভাবনা-কল্পনার প্রসার ঘটে পঠন ক্রিয়ার মাধ্যমে। শিক্ষা যেহেতু জীবনব্যাপী ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, তাই মানবজীবনে পঠনের গুরুত্ব অনেক বেশি।
শিখন ফল
১. আরবি ধ্বনিগুলোকে সঠিকভাবে উচ্চারণ করা এবং প্রত্যেক অক্ষরগুলো তাদের প্রকৃত উৎপত্তিস্থল থেকে উচ্চারণ করতে পারবে।
২. বই পড়ার সময় তার বিষয়বস্তু শব্দ ও বাক্য সশব্দে শুদ্ধভাবে পড়তে পারবে।
৩. কোন শব্দ শিক্ষা দেয়ার সময় শব্দটির সাথে সংশ্লিষ্ট ছবি মিলাতে সক্ষম হবে।
৪. গঠন কাঠামোতে প্রায় সাদৃশ্যপূর্ণ শব্দগুলোর মধ্যে পার্থক্য করতে শিখবে।
৫. স্পষ্ট আবৃত্তির মাধ্যমে দ্রুত পঠনের উপর ছাত্রদের অভ্যাস সৃষ্টি হবে।
৬. নিত্য নতুন ব্যবহারিক শব্দসমূহের অর্থ শিখতে পারবে।
৭. হরকত বিহীন আরবি এবারত বা অনুচ্ছেদ স্বাচ্ছন্দ্যে পড়তে পারবে।
পঠন শিক্ষাদান কৌশল
আরবি ভাষা পাঠদানের ধাপসমূহ
প্রথম ধাপ
একটি শিশুকে কিংবা প্রাথমিক পর্যায়ে শিখতে আগ্রহী ব্যক্তিকে আরবি ভাষা শেখাতে চাইলে- একটা ধারাবাহিক নিয়মের অনুসরণ করতে হবে। শুরুতে আরবি ভাষার অক্ষরগুলির উচ্চারণ সহজ ও শুদ্ধভাবে শিক্ষা দেওয়া। অক্ষর দ্বারা গঠিত ছোট ছোট শব্দ বা বাক্য দ্বারা পঠন শেখানো আরম্ভ করতে হবে। একজন শিক্ষক আরবি পড়া সঠিকভাবে শিক্ষাদান করতে চাইলে- তিনি শ্রেণিকক্ষে চারটি পদ্ধতি অনুসরণ করে চলবেন। পদ্ধতিগুলো হলো :
১. সরব পঠন
স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করে পড়াকে সরব পঠন বলে শ্রেণিকক্ষে নমুনা পাঠের পরে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সরবে পড়তে বলবেন। শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব স্থানে থেকে পাঠটি সশব্দে পড়বে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঠের প্রতি অধিক মনোযোগী করে তুলবে। সরব পঠনের পদ্ধতিসমূহ নিম্নরূপ :
- শিক্ষার্থীরা সরবে পড়বে।
- পূর্বের নমুনা পঠনের আলোকে কিছুক্ষণ পড়তে চেষ্টা করবে।
- শিক্ষার্থীর নিজের পড়া অবশ্যই নিজের কানে শুনতে হবে।
২. নীরব পঠন
সশব্দে না পড়ে, শুধু চোখে দেখে মনে মনে পাঠ করে- পাঠের বিষয় বোধগম্য করাকে নীরব পঠন বলে। শিক্ষার্থীদের নীরব পঠনের মাধ্যমে তাদের দ্রুত পঠন ও পাঠ বোধগম্য করার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।
নীরব পঠনের বিশিষ্ট দিকসমূহ:
- বিষয় উপলব্ধি ও বিষয়ের আয়ত্ত্বকরণ;
- পঠনে গতিশীলতা আনয়ন;
- গভীর উপলব্ধিজাত ধারণা পোষণ;
- দ্রুত পঠন মানেই নীরব পঠন।
নীরব পাঠে শিক্ষার্থীদের পথনির্দেশনায় শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। যে কোন ভাষায় একজন দক্ষ শিক্ষক নীরব পঠনে সুষ্ঠুভাবে আয়ত্ত্বকরণের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন। তাঁর বলিষ্ঠ ভূমিকা শিক্ষার্থীদের পাঠের প্রতি অধিক মনোযোগী করে তুলতে সাহায্য করবে।
৩. দিক নির্দেশনামূলক বা নমুনা পঠন:
শিক্ষার্থীরা পাঠটি পড়বেন তার একটি নমুনা বা উদাহরণ তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। পঠন শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে ‘নমুনা পঠন’ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নমুনা পাঠের কাজ দুটি। যেমন—
- সাধারণত শিক্ষকই নমুনা পাঠ করবেন।
- শিক্ষক কোন ভালো ছাত্র-ছাত্রী দ্বারা নমুনা পাঠ করাবেন।
সরব
উপকরণ: অভিধান ও অন্যান্য সহায়ক গ্রন্থাবলী ব্যবহার করা।
আরও দেখুনঃ