আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় দাখিল শিক্ষাক্রমে আরবি শিক্ষাক্রমের শিখনফল ও বিষয়বস্তু – যা দাখিল স্তরের শিক্ষাক্রমে আরবি এর অন্তর্ভুক্ত।
দাখিল শিক্ষাক্রমে আরবি শিক্ষাক্রমের শিখনফল ও বিষয়বস্তু
কোনো একটি পাঠ শেষে শিক্ষার্থী কী জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গী অর্জন করবে, সে সম্পর্কে পূর্বনির্ধারিত সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট বাক্য হলো শিখনফল। শিখন-শেখানো কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা এগুলো অর্জন করে। শিখনের মাধ্যমে অর্জন হয়ে থাকে বলেই একে বলা হয় শিখনফল। শিখনফল পূর্ব থেকেই নির্ধারণ করতে হয়। শিখনফলের উপরভিত্তি করেই লেখা হয় বিষয়বস্তু।
শিখনফল
শিখনফল হলো শিক্ষণ শিখন কার্যক্রমের প্রত্যাশিত ফলাফল নির্দেশক বিবৃতি। নির্দিষ্ট শ্রেণির জন্য বিন্যস্ত কোনো পাঠ শেষে শিক্ষার্থীরা যা জানতে, বলতে, করতে ও অনুভব করতে সক্ষম হবে; যা পাঠের শুরুতে জানা ছিল না, বলতে পারত না, করতে পারত না এবং অনুভব করতে পারতনা, তা যে বিবৃতির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়— তাকে শিখনফল বলে। এর মধ্যে বিষয়বস্তুর জ্ঞান দক্ষতা দৃষ্টিভঙ্গি এবং মূল্যবোধ অন্তর্ভুক্ত, যা শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বিষয়ে পাঠ শেষে অর্জন করবে। আচরণের পরিবর্তনের মাধ্যমে শিখনফল অর্জিত হয়ে থাকে বিধায় একে আচরণিক উদ্দেশ্যও বলা হয়।
তাই শিখনফল আচরণিক ভাষায় লেখা হয় এবং তা অবশ্যই পর্যবেক্ষণযোগ্য ও পরিমাপযোগ্য হবে। নির্দিষ্ট পাঠ শেষে শিখনফল অর্জিত হলো কি না, তা শিক্ষক সহজেই যাচাই করতে পারেন। এমনিভাবে শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণযোগ্য ও পরিমাপযোগ্য আচরণের মূল্যায়ন করে আচরণিক উদ্দেশ্য অর্জনের মাধ্যমেই ধাপে ধাপে শিক্ষার সাধারণ উদ্দেশ্য অর্জিত হয়।
শিখনফলের গুরুত্ব
শিখন হচ্ছে শিক্ষার্থীর আচরণের তুলনামূলক স্থায়ী পরিবর্তন। আচরণের এই পরিবর্তন ঘটতে পারে জ্ঞান, দক্ষতা এবং আচরণ বা দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে। জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি এই তিনটি ক্ষেত্রের অন্তর্ভূক্ত সবগুলো শিখন উদ্দেশ্য চিহ্নিত করে সেগুলো অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর আচরণে কী পরিবর্তন ঘটে, তার পরিমাপ করা দরকার।
তাই কোনো শিক্ষা স্তরের সাধারণ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট শ্রেণির জন্য শিক্ষাক্রমে নির্ধারিত বিষয়ের ভিত্তিতে শিখন ক্ষেত্রের বিভিন্ন উদ্দেশ্য সমন্বিত করে শিখনফল প্রণয়ন করা হয় এবং শিখন-শেখানো কার্যক্রম শিখনফলকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয়। পাঠের নির্ধারিত শিখনফল অর্জন করতে পারলেই শিক্ষার্থী শ্রেণিভিত্তিক যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে পরিগণিত হবে।
শিখনফল-এর বৈশিষ্ট্য
- শিখনফলে শিক্ষার্থীর প্রান্তিক শিখন উদ্দেশ্য-এর বর্ণনা থাকবে।
- সুনির্দিষ্ট ক্রিয়াপদ দ্বারা শিখনফল লিখতে হবে যাতে শিক্ষার্থীর কৃতিত্ব বা পারদর্শিতা পরিমাপ করা যায়।
- একটি শিখনফল শুধু এক ধরনের আচরণ দিয়ে গঠিত হবে। শিখনফল সংক্ষিপ্ত, স্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য ও অর্জনযোগ্য হবে।
- শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে পাঠের উদ্দেশ্য অর্জিত হবে।
দাখিল স্তরে আরবি শিক্ষাক্রমে শিখনফলের বিশেষত্ব
দাখিল স্তরে আরবি বিষয়ের অন্তর্ভূক্ত হলো আরবি ভাষা ও সাহিত্য। তাই ভাষা শিখনের দক্ষতাগুলোকে (শোনা, বলা, পড়া, লেখা) তিনটি শিখন ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন স্তরের সাথে সমন্বয় করে শিখনফল নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্য দিকে আরবি সাহিত্যের রস আস্বাদনের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে মূল্যবোধ তৈরির প্রতি লক্ষ্য রেখে ধারাবাহিকভাবে সাহিত্যের শিখনফল প্রণয়ন করা হয়েছে।
আরও দেখুনঃ