আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় সংস্কৃত লিঙ্গপ্রকরণম
সংস্কৃত লিঙ্গপ্রকরণম
সংস্কৃত লিঙ্গপ্রকরণম
‘লিঙ্গ” শব্দের অর্থ চিহ্ন। যার দ্বারা পুরুষ বা স্ত্রী বুঝায় কিংবা স্ত্রী বা পুরুষ কিছুই নয় এরূপ বোঝায়, তাকে লিঙ্গ বলা হয় ।
সংস্কৃতে লিঙ্গ তিন প্রকার – (১) পুংলিঙ্গ (২) স্ত্রীলিঙ্গ ও (৩) ক্লীবলিঙ্গ)।
বাংলা বা ইংরেজি ব্যাকরণে পুরুষবাচক শব্দগুলো পুংলিঙ্গ, স্ত্রীবাচক শব্দগুলো স্ত্রীলিঙ্গ এবং যেসব শব্দে সূত্রী বা পুরুষ কিছুই বোঝায় না, সেগুলো ক্লীবলিঙ্গ। সংস্কৃতে কিন্তু এভাবে লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায় না। সংস্কৃত ব্যাকরণে সত্রীবাচক শব্দও পুংলিঙ্গ, পুরুষবাচক শব্দও ক্লীবলিঙ্গ এবং বস্তুবাচক শব্দও পুংলিঙ্গ হয়। যেমন— ‘দার’ শব্দ ত্রীবাচক হলেও পুংলিঙ্গ, ‘মিত্র’ শব্দ পুরুষবাচক হলেও ক্লীবলিঙ্গ এবং ‘বৃক্ষ’ শব্দ বস্তুবাচক হলেও পুংলিঙ্গ।
সংস্কৃতে লিঙ্গ নির্ণয়ের জন্য অনেক নিয়ম আছে। এখানে সাধারণ দু-একটি নিয়ম দেখান হল :
পুংলিঙ্গ
দেব, অসুর, স্বর্গ, গিরি, সমুদ্র ইত্যাদি অর্থ প্রকাশক সকল শব্দ পুংলিঙ্গ। যেমন—
(ক) দেববাচক- দেবঃ, সুরঃ, অমরঃ ইত্যাদি।
(খ) অসুরবাচক- অসুরঃ, দৈত্যঃ, দানবঃ ইত্যাদি।
(গ) স্বর্গবাচক- স্বর্গঃ, ত্রিদিবঃ, সুরলোকঃ ইত্যাদি।
(ঘ) গিরিবাচক- গিরিঃ, পর্বতঃ, শৈলঃ ইত্যাদি।
(ঙ)সমুদ্রবাচক- সমুদ্রঃ, সাগরঃ, অর্ণবঃ ইত্যাদি।
দেবগণের নামও পুংলিঙ্গবাচক শব্দ। যেমন— ইন্দ্রঃ, বিষ্ণুঃ শিবঃ, গণেশঃ, কার্তিকেয়ঃ ইত্যাদি।
স্ত্রীলিঙ্গ
আ-কারান্ত, ঈ-কারান্ত ও উ-কারান্ত শব্দ ত্রীলিঙ্গ। যেমন- লতা, নদী, বধূ ইত্যাদি।
ঋ-কারান্ত মাতৃ (মা), দুহিতৃ (কন্যা), স্বস্ (ভগ্নী), ননান্দু (ননদ) প্রভৃতি শব্দ ত্রীলিঙ্গ। যেমন— মাতা, দুহিতা, স্বসা, ননান্দা ।
ক্লীবলিঙ্গ
মুখ, নয়ন, বন, কুসুম, ধন ও অনুবাচক শব্দগুলো ক্লীবলিঙ্গ। যেমন-
(ক) মুখবাচক- মুখম্, বদনম্, আননম্ ইত্যাদি ।
(খ) নয়নবাচক- নয়নম্, নেত্রম্, লোচনম্ ইত্যাদি।
(গ) বনবাচক- বনম্, অরণ্যম্, বিপিনম্ ইত্যাদি।
(ঘ) কুসুমবাচক- কুসুমম্, পুষ্পম্ ইত্যাদি।
(ঙ) অনুবাচক- অন্নম্, খাদ্যম্, ভোজ্যম্ ইত্যাদি।
(চ) ধনবাচক- ধনম্, বিত্তম্, দ্রবিণম্ ইত্যাদি ।
লিঙ্গ পরিবর্তন
পুংলিঙ্গ শব্দকে ত্রীলিঙ্গে রূপান্তরিত করতে হলে পুংলিঙ্গ শব্দের শেষে প্রধানত আ ও ঈ যোগ করতে হবে। যেমন-
অনুশীলনী
- লিঙ্গ কাকে বলে? সংস্কৃতে লিঙ্গ কত প্রকার ও কি কি?
- বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণের সঙ্গে সংস্কৃত ব্যাকরণের লিঙ্গের পার্থক্য কি?
- উদাহরণসহ পুংলিঙ্গ নির্দেশক প্রথম নিয়মটি উল্লেখ কর।
- স্ত্রীলিঙ্গ নির্দেশক দুটি নিয়ম উদাহরণসহ উল্লেখ কর।
লিঙ্গ পরিবর্তন কর:
কৃশা, অশ্বঃ, মৃগী, দীনঃ, পিতামহঃ।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
(ক) ‘দার’ শব্দ কোন্ লিঙ্গ?
(খ) ‘লিঙ্গ’ শব্দের অর্থ কি?
(গ) মুখবাচক শব্দ কোন্ লিঙ্গ ?
(ঘ) গিরিবাচক শব্দ কোন্ লিঙ্গ ?
(ঙ) আ-কারান্ত শব্দ কোন্ লিঙ্গ?
শুদ্ধ উত্তরটির পাশে টিক (/) চিহ্ন দাও :
(ক) সংস্কৃতে লিঙ্গ তিন/দুই/চার/পাঁচ প্রকার ।
(খ) বনবাচক শব্দ পুংলিঙ্গ/স্ত্রীলিঙ্গ / ক্লীবলিঙ্গ/উভয়লিঙ্গ।
(গ) স্বর্গবাচক শব্দ ত্রীলিঙ্গ/ক্লীবলিঙ্গ/পুংলিঙ্গ উভয়লিঙ্গ।
(ঘ) ঈ-কারান্ত শব্দ পুংলিঙ্গ / উভয়লিঙ্গ / ক্লীবলিঙ্গ/স্ত্রীলিঙ্গ।
(ঙ) ‘নদ’ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ নদী/নদি/নদা/নদো ।
আরও দেখুন :