আরবি ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় আরবি ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ – যা আরবি ভাষা ও সাহিত্য শিখনের বিবেচ্য দিকসমূহ এর অন্তর্ভুক্ত।

আরবি ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ

 

আরবি ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ

 

আরবি ভাষার উৎপত্তি

আরবি ইন্দো-ইউরোপীয় গোষ্ঠীর সেমিটিক ভাষাসমূহের একটি ভাষা। এটি প্রাচীন ভাষাসমূহের অন্যতম ভাষা । সকল ভাষাই আল্লাহর সৃষ্টি। মানব সৃষ্টির শুরু থেকেই ভাষার সৃষ্টি। অনেকের মতে হযরত আদম আলাইহিস সালাম সর্বপ্রথম আরবি ভাষায় কথা বলেন। আল্লামা জালালুদ্দিন আস-সুয়ুতির মতে- সর্বপ্রাচীন ও প্ৰথম ভাষা আরবী ভাষা। কেননা জান্নাতে পরীক্ষার জন্য হযরত আদম আলাইহিস সালামকে যে শব্দ জ্ঞান ও ভাষা শেখানো হয়েছিল, তা ছিল আরবি। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহুতায়ালা আনহু/আনহা থেকে বর্ণিত। হযরত আদম আলাই সালাম-এর ভাষা ছিল আরবি।

দুনিয়ায় আসার পর তিনি সুরিয়ানি ভাষায় কথা বলেন। অতঃপর যখন তাঁর তওবা কবুল হয়, তখন আবার আরবি ভাষায় কথা বলতে থাকেন। তাঁর উপর আসমানি সহিফাগুলো আরবি ভাষায় নাযিল হয়। আব্দুল মালিক ইবনে হারিস-এর মতে আদম আলাইহিস সালাম যে ভাষা নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেন, তা ছিল আরবি। মানব জাতির আদি মানব-মানবী যেমন আরব ভূমিতেই আবির্ভূত হন, তেমনি আদি মানবগুষ্ঠির ভাষার সৃষ্টি ও এখানেই।

অনেক পণ্ডিত মনে করেন, ভাষা সৃষ্টির আগে মানুষ আকার, ইঙ্গিত, ইশারা, চিত্র ইত্যাদি ব্যবহার করে মনের ভাব প্রকাশ করতো। কিন্তু আমরা যদি আল-কুরআন পর্যালোচনা করি, তা হলে দেখা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের মানব জাতির সৃষ্টির বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছেন। সুতরাং একথা স্পষ্ট যে, মানব জাতির সৃষ্টির পূর্বেই ভাষার সৃষ্টি ।

হযরত আদম আলাইহিস সালাম তদীয় সন্তান হযরত শীষ আলাইহিস সালামকে শিক্ষাদান করেন। হযরত নূহ আলাইহিস সালাম তাঁর অনুসারীদের তুফানের বিষয়ে অবগত করান। তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মক্কায় বসবাস করেন। মক্কার ভাষা আরবি। সুতারাং সৃষ্টি সভ্যতার শুরু থেকেই আরবি-ভাষা স্বমহিমায় উদ্ভাসিত ও বর্তমান

প্রাচীন আরবি-ভাষার রূপরেখায় আমরা যা দেখতে পাই, সব সেমিটিয় ভাষার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ব্যঞ্জন-বর্ণ দিয়ে গঠিত ধাতুরূপ বা শব্দমূল। প্রকৃতি আরব ভূমিকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে। উত্তরে হেজাজ প্রদেশ, দক্ষিণে ইয়ামেন। তারাই ইয়ারুব ইবনে কাহতান এর বংশধর। মদিনার আউস ও খাজরাজ যারা আনসার নামে অভিহিত তারাও কাহতানি আরব। হিজাজী আরবগণ পূর্বকাল থেকেই যাযাবর জাতি। ইয়েমেনের বাসিন্দারা ‘হিমিয়ারী’ নামে পরিচিত। নামে মাত্র হিমিয়ারীগণের অধীনে থাকলেও হেজাজস্থ যাযাবর আরব জাতির স্বাধীনতা চিরকালই অক্ষুন্ন ছিল।

দক্ষিণ আরবের ভাষা খ্রিষ্ট্রীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে আবিসিনিয়গণ কর্তৃক হিমিয়ারী সাম্রাজ্য ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্ত হয়। কিন্তু এই সময় হতেই উত্তর আরবস্থ হেজাজী ভাষার শ্রীবৃদ্ধি হতে থাকে। এ হেজাজীয় ভাষাই এযাবৎকাল আরবি-ভাষা নামে অভিহিত হয়ে আসছে।

ভাষার উৎস মনের ভাব প্রকাশের প্রবল ইচ্ছা থেকেই। জীববিজ্ঞানের বিবর্তনের ইতিহাস এটা প্রমাণ করে যে, প্রাচীন ভাষাসমূহের অন্যতম ভাষা হলো আরবি। যদিও আরবি-ভাষার উৎপত্তির সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে কেউ যথার্থ কোন প্রমাণাদি উপস্থাপনে সক্ষম হননি।

ডক্টর আলী আবদুল ওয়াহিদ ওয়াফির মতে আরবি-ভাষা হিজাজ ও নজদ এলাকায় উৎপত্তি লাভ করে । আব্দুল মালিক ইবনে হাবীব-এর মতে- হযরত নূহ আলাইস সালাম-এর প্লাবনের পর জুরহুম নামক এক ব্যক্তি আরবী ভাষায় কথা বলেন।

উপরোক্ত আলোচনায় আমরা জানতে পারি যে, আরবি -ভাষায় সর্বপ্রথম কথা বলেছিলেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম। আল্লাহর আদেশ অমান্য করায় তিনি আরবি-ভাষা ভুলে যান। পরবর্তীতে তাঁর তওবা কবুল হলে তিনি পুনরায় আরবিভাষায় কথা বলেন। দীর্ঘদিন এ ভাষা প্রচলিত ছিল। কালের বিবর্তনে আরবি-ভাষা সুরানি বা সুরইয়ানি ভাষায় রূপান্তরিত হয়, যা আরবি-ভাষার বিকৃত রূপ । হযরত নুহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নৌকার সকল যাত্রী এই সুরইয়ানি ভাষায় কথা বলতেন। অন্য মতে, জুরহুম নামক ব্যক্তির ভাষা ছিল আরবি। তাঁর পূর্বপুরুষরাও আরবিভাষায় কথা বলতেন ।

অপরদিকে হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালামও আল্লাহ কর্তৃক আরবিভাষাপ্রাপ্ত হন। একটা পর্যায়ে জুরহুমের অধঃস্তন বংশধর বনু কাহ্তান হযরত ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম-এর বংশধরদের সাথে মিলিত হয়ে একত্রে বসবাস করে। তারা বনু ইসরাঈলের নিকট হতে আরবি-ভাষা শিক্ষা লাভ করেন। এমনিভাবে আল-কুরআন নাজিলের পূর্ব পর্যন্ত আরবি-ভাষার ব্যবহার অব্যাহত থাকে। অদ্যাবধি আরবি প্রচলিত আছে, যা সেমিটিক ভাষাসমূহের মধ্যে একমাত্র জীবিত ভাষা।

আরবিভাষার ক্রমবিকাশ

পৃথিবীতে প্রায় ৭০০০-এর অধিক ভাষা বর্তমানে প্রচলিত। বর্তমান সময়ে ইংরেজি ভাষার আধিপত্য দেখা গেলেও সুপ্রাচীনকাল থেকে আরবি ভাষার আধিপত্য ও মর্যাদা আমরা দেখতে পাই। আরবি-ভাষার আধিপত্যের প্রমাণ আমরা জাহেলী যুগের কবিতা বা কাসিদায় পেয়ে থাকি। এ ভাষার বর্ণগুলো সুরাইয়ানি ও নাবাতানি ভাষা থেকে উদ্ভূত। জাহেলী যুগের বিখ্যাত সপ্তগীতিকা আরবি-ভাষার সমৃদ্ধি ও শব্দ ভাণ্ডার সম্পর্কে শক্তিশালী বার্তা বহন করে।

আরবি-ভাষার ক্রমবিকাশকে আমরা কয়েকটি ভাগে ভাগ করতে পারি !

জাহেলী যুগ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আবির্ভাব বা নবুওয়াতপ্রাপ্তির পূর্ব সময়কে ‘আল-আসরুল জাহেলিয়াহ অর্থাৎ অজ্ঞতা ও অন্ধকারের যুগ নামে অভিহিত করা হয়। এ সময় পুত্তলিকতা ও অংশীবাদ ধারণায় তারা আচ্ছন্ন ছিল। স্বভাবজাতভাবেই তারা ছিল তীক্ষ্ণ জ্ঞানের অধিকারী। তাদের মধ্যে সাহিত্য চর্চা হতো। সাহিত্য চর্চা নিয়ে মেলা হতো। ওকাজ মেলায় সাহিত্য আসরে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতাসমূহ কাবাঘরে ঝুলিয়ে দেয়া হতো। শ্রেষ্ঠ কবি ও কবিতার জন্য পুরস্কৃত করা হতো। বংশীয় বা গোত্রীয় লোকজন এতে অহংকার প্রকাশ করত। তথ্য-প্রমাণাদির ভিত্তিতে-এর বর্ণনা পাওয়া যায়।

তাদের কবিতায় আরবি-ভাষার সৌন্দর্য বিকশিত হয়েছে। চঞ্চলা হরিণীর ন্যায় আরবি-ভাষা তার গতি প্রকৃতি ছড়িয়েছে। তৎকালীন বিখ্যাত কবিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— ইমরুল কায়েস, আনতারা বিন সাদ্দাদ, কা’ব বিন যুহাইর, যুহাইর বিন আবি সালমা, আশা বাউনিয়া, লাবিদ বিন রাবিয়া প্রমূখ ।

 

আরবি ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ

 

ইসলামী যুগ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুয়্যত প্রাপ্তির পরবর্তী সময়কে ইসলামী যুগ হিসেবে অভিহিত করা হয়। তাঁর নিকট সমগ্র মানবজাতির জন্য জীবন বিধান ‘আল-কুরআন’ নাজিল হলে আরবি ভাষার সমৃদ্ধি ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পায় ও মর্যাদার আসন অলংকৃত করে। আরবি ভাষার শব্দ ভাণ্ডার, ছন্দ, অলংকার সকল শাখায় পূর্ণতা লাভ করে।

আরবি ভাষার বিকাশে নতুন যুগের সূচনা ঘটে। যদিও এ সময় আরবি ভাষা লিখতে জানতেন মোট ১১ জন ব্যক্তি। তন্মধ্যে আবু সুফিয়ান-এর পরিবারেরই ছিলেন ৪ জন। উল্লেখ্য, বদর যুদ্ধে কাফেরদের মুক্তির শর্ত ছিল একজন কাফের দশ জন মুসলমানকে লেখা শেখাবেন অর্থাৎ সে সময় আরবি শেখারও প্রচলন ছিল।

অনেকের মতে, আরবি ভাষার সর্বপ্রথম লেখক হলেন ‘আম্বার’-এর অধিবাসী ‘মুররা বিন্ মুররা’ এবং ‘আসলাম বিন্ হাফরাহ্”। কারো মতে ‘হার্ব বিন উমাইয়া বিন্ আবদে শাম্‌স্‌ । তিনি ‘হিরারত অধিবাসীদের কাছ থেকে শিখেছেন। হিরার অধিবাসীরা ‘আম্বার’-এর কাছ থেকে শিখেছেন। এ সময় আরবি লেখনীতে কোন নক্‌তা বা হরকত ব্যবহৃত হতো না ।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়কালে ব্যাপক আকারে মুসলিমদের মধ্যে আল-কুরআন ও আল-হাদিস চর্চার ফলে আরবি ভাষা উৎকর্ষ অর্জন করে। বিখ্যাত কবি লাবিদ বিন্ রাবিয়া মন্তব্য করেন-

“আমার কাছে যেহেতু আল-কুরআন আছে; সুতরাং আর কোন কবিতা রচনার প্রয়োজন নেই”।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তেকালের পর বৃহৎ মুসলিম সাম্রাজ্যে ব্যাপকভাবে ধর্মীয় চর্চা শুরু হলেও আঞ্চলিকতার কারণে আল-কুরআন পঠনে পদ্ধতিগত সমস্যা তৈরি হয়। হিজরি প্রথম শতাব্দিতে আরবি ভাষা নোক্তা বা নক্তা ছাড়াই লেখা হতো ।

জনৈক অনারব সুরা তাওবার ৩ নম্বর আয়াতে ! jiss italini o II পাঠ করছিলেন।উক্ত আয়াতে রাসূলুহু শব্দের লাম-কে যের দিয়ে পড়লে জনৈক সাহাবী বিষয়টি হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর দৃষ্টিগোচরে আনেন। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু ভাষার শুদ্ধতা ও আল-কুরআনকে বিশুদ্ধ রূপে পঠনে সে সময়ের পণ্ডিত আবুল আসওয়াদ আদ্-দুয়ায়েলীকে সমস্যা নিরসনের দায়িত্ব দেন। তিনি বিভিন্ন বর্ণকে আলাদাভাবে বোঝানোর জন্য বিভিন্ন ফোঁটা (নক্তা) এবং যবর, যের, পেশ, সাকিন তাশদীদ বুঝানোর জন্য বিশেষ চিহ্ন (হরকত) ব্যবহার করেন।

উমাইয়া যুগ

এই সময়ে নোকতার ব্যবহার শুধুমাত্র আল-কুরআন পাঠেই সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তীতে মুসলিম সাম্রাজ্য সুদূর ইউরোপ-আফ্রিকা ছড়িয়ে পড়ে। আর দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে আরবিকে ঘোষণা করলে-এর প্রভাব আরো বৃদ্ধি পায়। দাপ্তরিক ভাষা হওয়ার কারণে আরবি ভাষাকে সর্বজনগ্রাহ্য করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

হিজরি দ্বিতীয় শতকে ‘খলিল বিন্ আহ্মদ’ অন্য একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করলেন। তিনি ফোঁটা বা নোকতার পরিবর্তে যবর বুঝানোর জন্য বর্ণের উপর বাঁকা ছোট্ট আলিফ, যের বুঝানোর জন্য বর্ণের নিচে ছোট্ট ইয়া দিলেন এবং পেশ বুঝানোর জন্য বর্ণের উপর ছোট্ট ওয়াও দিলেন। তানবিন বুঝানোর জন্য ছোট্ট করে দুইবার টান দিলেন। অতঃপর এই প্রক্রিয়া খলিফা ‘আব্দুল মালিক বিন্ মারওয়ান’-এর আমলে পরিপূর্ণতা লাভ করে।

আরব সাম্রাজ্যের বিস্তারের ফলে সিরিয়া প্রথম দেশ, যাদের ভাষা হয়ে যায় আরবি। এ সময় আরবি বর্ণমালা বিন্যাস করেন বিন্ আছিম আল লাইছি, ইয়াহয়া বিন ইয়ামুর আল আদওয়ানি। ৭১২ খ্রিষ্টাব্দে ‘হাজ্জাজ বিন্ ইফসুফ’-এর নির্দেশে হরকত সংযোজিত হলে আরবি লেখনি পূর্ণতা অর্জন করে। সেই পদ্ধতি আজও বিদ্যমান।

আব্বাসী যুগ

জ্ঞান-বিজ্ঞানের স্বর্ণযুগ ছিল এটি। ব্যাপক আরবি ভাষা চর্চা ছাড়াও গ্রিক ও ল্যাটিন ভাষার লিখিত অনেক বিখ্যাত ও মূল্যবান পুস্তক আরবিতে অনূদিত হয়। এ সময় পণ্ডিতরা বিশেষ পরিভাষাগুলো আরবি করার প্রয়াস পান। যাতে করে শব্দগুলো উৎপত্তিগতভাবে আরবিতে ব্যবহৃত হতে পারে। এ সময়কালের শুরুতেই আরবি ভাষা শিক্ষা দেয়ার জন্য লেখার কাজ শুরু হয়। ফলে আরবি ভাষা বই-পুস্তকের মাধ্যমে শিক্ষার স্তরে পৌঁছে। আরবি ব্যাকরণ, নাহু, সরফ, ধ্বনি বিজ্ঞান, ভাষা বিজ্ঞান, অলঙ্কারশাস্ত্র, অভিধানগত বইয়ের প্রকাশ ঘটে। এভাবে আরবি ভাষা প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

 

আরবি ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ

 

আধুনিক যুগ

সভ্যতার উৎকর্ষ সাধনে আরবি ভাষা তেজোদ্দীপ্ত,যা আজ সমগ্র বিশ্বে সমাদৃত। শিল্প-সাহিত্য, জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখাতেই আরবি ভাষার কদর। ব্যবসায়িক বাজার দখল করার জন্য আরবী ভাষার সমৃদ্ধিও পরোক্ষভাবে অর্জিত হয়। আরব ভূমি ছাড়াও এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকায় আরবি ভাষার যশ-খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। আরব প্রতিভা জগতকে জ্ঞানালোকে আলোকিত করার নিমিত্তে ব্যস্ত। বিশেষ করে সিরিয়া, লেবানন, লিবিয়া, মিসর প্রভৃতি দেশে আরবি ভাষা ও সাহিত্য চর্চা চরম উৎকর্ষ লাভ করে ।

মিসরীয় কথা সাহিত্যিক ‘নাজিব মাহফুজ’ আরবি ভাষায় তার ‘ত্রয়ী’ উপন্যাসের জন্য ১৯৮৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। তার রচনাগুলোও আরবি ভাষাতেই ছিল। আরবি ভাষার বিকাশ ও উত্থান বর্তমানে আরও বেগবান।

আরবি শব্দ ভাণ্ডারের মণি-মুক্তায় তার উজ্জ্বলতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরবি ভাষার রক্ষক স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন। আমরা জানি, আল্লাহ তাঁর জন্য আরবি ভাষাকে নির্বাচিত করেছেন। এছাড়াও আল-কুরআন, আল-হাদিস ও রাসূল সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম-এর ভাষাও আরবি। মুসলিম হিসেবে বিশ্বাস করি, পরকালের ভাষাও হবে আরবি। আরবি ভাষা ১ কোটি ২০ লক্ষ শব্দ ভাণ্ডার নিয়ে পৃথিবীর সকল ভাষা জগতে স্বমহিমায় বিকশিত হচ্ছে । পৃথিবীর একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাষাও আরবি ভাষা।

আরও দেখুনঃ

 

Leave a Comment