তত্ত্বায়নের সমস্যা ও মূলনীতি প্রসঙ্গের পুনরুত্থাপন

আজকে আমাদের আলোচনার  বিষয়-তত্ত্বায়নের সমস্যা ও মূলনীতি প্রসঙ্গের পুনরুত্থাপন

তত্ত্বায়নের সমস্যা ও মূলনীতি প্রসঙ্গের পুনরুত্থাপন

আমরা ভূমিকা পরবর্তী ছয়টি অধ্যায়ে বিভিন্ন তাত্ত্বিক সমস্যা আলোচনা করেছি। আমরা লক্ষ্য করেছি প্রতিটি তত্ত্বেরই কোন না কোন সীমাবদ্ধতা রয়েছে । তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা এর আভ্যন্তরীণ ও বহিরাঙ্গিক সংগঠনে প্রতিফলিত। তত্ত্বের সীমাবদ্ধতার বীজ নিহিত থাকে তার পরিশোষিত অভিক্রমে ।

অভিক্রমের সীমাবদ্ধতা থেকে তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা উৎসারিত হয়। আমরা বর্তমান গবেষনাপত্রে ছয়টি বৃহৎ অভিক্রমের কথা উল্লেখ করেছি এবং ছয়টি স্বতন্ত্র অধ্যায়ে তাদের সম্পর্কে আলোচনা করেছি, যথা : (ক) ঐতিহাসিক বাগর্থবিদ্যা, (খ) সাংগঠনিক বাগর্থবিদ্যা, (গ) যৌক্তিক বাগর্থবিদ্যা, (ঘ) জ্ঞানাত্মক বাগর্থবিদ্যা, (ঙ) রূপান্তরমূলক বাগর্থবিদ্যা, এবং (চ) প্রয়োগাত্মক বাগর্থবিদ্যা । এই বিভাজনকে আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে নীচের চিত্রে প্রকাশ করতে পারি :

 

তত্ত্বায়নের সমস্যা ও মূলনীতি প্রসঙ্গের পুনরুত্থাপন

 

প্রতিটি অভিক্রমের রয়েছে এর নিজস্ব সীমাবদ্ধতা । বিভিন্ন অভিক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট মৌলিক সীমাবদ্ধতার সারসংক্ষেপ আমরা নীচের সারণীর মাধ্যমে তুলে ধরতে পারি :

 

তত্ত্বায়নের সমস্যা ও মূলনীতি প্রসঙ্গের পুনরুত্থাপন

 

সামগ্রিকভাবে ভাষার অর্থ বিশ্লেষণে সক্ষম একটি পূর্ণাঙ্গ বার্ষিক তত্ত্ব এখানো রচিত হয়নি । তা হওয়া সুদূরপরাহত। তবে আমরা নৈরাশ্যবাদী নই। বাগর্থবিদদের অবিরাম প্রচেষ্টা একদিন কাঙ্খিত ফলাফলে রূপ নিবেই। আজ তত্ত্বায়নের যে সমস্যাবলী বাগর্থবিদ্যা মোকাবিলা করছে জ্ঞানবিজ্ঞানের ক্রমোন্নতির ফলে একদিন সেসব দুরীভূত হবে ।

কিন্তু কে জানে হয়তো সেদিন দেখা দিবে তত্ত্বায়নের নতুনতর সমস্যা যার মোকাবিলায় বাগর্থবিদ্যা আরো সম্মুখপানে চালিত হবে। পূর্ণতার পথে এই অভিযাত্রা হয়তো অসীম। তাত্ত্বিক পূর্ণতার কোন শেষ আছে কিনা তা বোঝা যায় না। যতোই সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় ততোই ভেসে উঠে ন দৃশ্যপট ততোই যেন প্রসারিত হয় দিগন্ত।

তত্ত্বায়নের সমস্যা ও মূলনীতি প্রসঙ্গের পুনরুত্থাপন

এ যেন সতত প্রসারমান মহাবিশ্বের সাথে সঙ্গতি রেখেই ঘটে। – প্রসারমানতার মাঝে যে প্রক্রিয়াটি প্রত্যক্ষ করা যায় তা হলো পুরনো অতীত হয় নতুনকে স্বাগত জানিয়ে । বাগর্থবিদ্যায় পুরনো তত্ত্ব বাতিল হবে, সংশোধিত হবে, পরিমার্জিত হবে এবং জন্ম নিবে নতুন তত্ত্ব।

দুর্বল তত্ত্বকে অপসারিত করবে সবল তত্ত্ব যা আবার অপসারিত হবে আরো সবল তত্ত্ব খাড়া এবং এভাইে চলতে থাকবে।প্রতিটি তত্ত্বেরই নির্দিষ্ট মূলনীতি রয়েছে। মূলনীতি হলো সেই মৌলিক ধারণা যার উপর ভিত্তি করে একটি তত্ত্ব প্রগঠিত হয় এবং যা সেই তত্ত্বকে বিশেষ আকার ও গঠনে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করে। আমরা ছয়টি অতিক্রমের সাথে যুক্ত যেসব তত্ত্বের সাক্ষাত পেয়েছি তাদের মূলনীতিসমূহ সংক্ষেপে তালিকাবদ্ধ করতে পারি । নীচের সারণীটি সেই চেষ্টায় নিবেদিত

 

তত্ত্বায়নের সমস্যা ও মূলনীতি প্রসঙ্গের পুনরুত্থাপন

তত্ত্বায়নের সমস্যা ও মূলনীতি প্রসঙ্গের পুনরুত্থাপন

 

উপরে বিভিন্ন তত্ত্বের সাফল্যের মাত্রা নির্ণীত হয়েছে (প্রতিটি তত্ত্বের মোট প্রাপ্ত মূল্যকে সর্বোচ্চ প্রাপ্য মূল্য ২৪ দিয়ে ভাগ করে ভাগফলকে ১০০ নিয়ে গুদ করে)। এ ধরনের গাণিতিক পরিমাপের একটি অসুবিধা হলো কোন তত্ত্বের বিশেষ শর্ত প্রতিপালনের মাত্রাস্বরূপ যে মূল্য প্রদত্ত হয় তা অধিকাংশই ব্যক্তিনিষ্ঠ।

বল আরোপন পদ্ধতি এখনো উদ্ভাবিত হয়নি । এর উদ্ভাবনের ভার ভবিষ্যৎ গবেষকদের উপর। এরকম পদ্ধতি উদ্ভাবিত হলে সঠিকভাবে বলা সম্ভব হবে কোন তত্ত্বের অবস্থান কোথায়। এতে তত্ত্বের সমালোচনা আরো গতিশীল ও বাস্তবভিত্তিক হবে। তবে আমাদের বিবেচনায় এ পদ্ধতির ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের প্রয়োগ হতে পারে । কিন্তু কিভাবে হবে তা নির্ধারণের জন্য বিশৃঙ্খলাগত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে ।

আরও দেখুন:

 

Leave a Comment